ইউক্রেনের শস্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দিল ইউরোপের তিন দেশ

আন্তার্জাতিক ডেস্ক : সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) প্রতিবেশী ৫ দেশে ইউক্রেনের শস্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন। যার প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের শস্য আমদানিতে নিজেদের বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি।
আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

২০২২ সালে রাশিয়ার আক্রমণের আগে ইউক্রেন বিশ্বের শীর্ষ শস্য রফতানিকারক দেশের মধ্যে একটি ছিল। কিন্তু সংঘাত শুরুর পর থেকে বিশ্ববাজারে দেশটির কৃষি পণ্য সরবরাহের সক্ষমতা কমে আসে। ফলে নিজেদের পছন্দসই কৃষ্ণসাগরের রুট ব্যবহার করতে না পেরে সংঘাত শুরুর পর থেকে দেশটির কৃষকরা শস্য রফতানির জন্য নির্ভর করতে থাকে প্রতিবেশী দেশগুলোর ওপর।

কিন্তু সেই প্রতিবেশী দেশগুলোতে ইউক্রেনের পণ্যের আধিক্যের কারণে দাম কমতে থাকে শস্য ও তৈলবীজের। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হন দেশগুলোর স্থানীয় কৃষকরা। ফলে ইউক্রেন থেকে কৃষি পণ্য আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয় দেশগুলোর সরকার।

সে সময়ে দেশগুলো থেকে পৃথক পৃথক নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিবর্তে কেন্দ্রীয়ভাবে পদক্ষেপ নেয় ইইউ। এর অধীনে ইউক্রেনকে প্রতিবেশী সেই দেশগুলোর মাধ্যমে রফতানির অনুমতি দেয়া হয় অন্য কোথাও বিক্রি করতে হবে এমন শর্তে।

তবে সম্প্রতি প্রতিবেশী দেশেগুলোতে ইউক্রেন রফতানি কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করার প্রতিশ্রুতি দেয়ায় শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সেই নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ না বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ইইউ। তবে বিষয়টি বেশ সংবেদনশীলই বলা যায়, কেননা, কৃষকরা বর্তমানে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রির প্রস্তুতি নিচ্ছে।

শুক্রবার ইইউ বাণিজ্য কমিশনার ভালদিস ডোমব্রোভস্কিস বলেন,
ইউক্রেনের শস্য আমদানির বিরুদ্ধে এককভাবে পদক্ষেপ নেয়া থেকে দেশগুলোর বিরত থাকা উচিত। কিন্তু পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া এবং হাঙ্গেরি তাদের নিজেদের বিধিনিষেধ পুনরায় আরোপের করে দ্রুত প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তবে দেশগুলো ইউত্রেনে পণ্যের ট্রানজিটের অনুমতি অব্যাহত রাখবে।

মারেক্সের সিনিয়র কৃষি কৌশলবিদ টেরি রিলি বলেন, যতক্ষণ ইউক্রেন এটি নিশ্চিত করবে যে ট্রাক এবং ট্রেনের মাধ্যমে তাদের পণ্য রফতানি করা দেশে পৌঁছানো হচ্ছে, ততক্ষণ পর্যন্ত প্রতিবেশী দেশগুলোতে রফতানি নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইউক্রেনের রফতানি সক্ষমতার ওপর কোনো প্রভাব পড়বে না। তবে কৃষ্ণসাগরের রুট ব্যবহার করে পণ্য রফতানি করা এখনও একটি উদ্বেগের বিষয়।

তবে ইউক্রেন শস্য রফতানি সীমিত করতে কী প্রতিশ্রুতি দিয়েছে বা নতুন নিষেধাজ্ঞা কীভাবে পণ্যের প্রবাহকে প্রভাবিত করবে সে বিষয়টি স্পষ্ট নয় বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

কিয়েভের শস্য রফতানির ওপর নিষেধাজ্ঞার মেয়াদ না বাড়ানোর ইইউর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। পাশাপাশি তিনি বলেন, ইইউ সদস্য দেশগুলো ইইউ নিয়ম ভঙ্গ করলে তার সরকার সভ্যভাবে তার প্রতিক্রিয়া জানাবে।

তবে পোল্যান্ড, স্লোভাকিয়া ও হাঙ্গেরি যুক্তি দিয়েছে যে তাদের পদক্ষেপগুলো নিজেদের অর্থনীতির স্বার্থে নেয়া হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধসোমবার থেকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলবে বাস
পরবর্তী নিবন্ধডেঙ্গু প্রতিরোধে ওয়ালটন প্লাজার সচেতনতামূলক কর্মসূচি