কালোবাজারিরা নিয়ন্ত্রণের বাইরে: শিল্পমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: কালোবাজারি-অবৈধ পণ্যের গুদামজাতকারী ব্যবসায়ীরা নিত্যপণ্যের দাম অস্থিতিশীল করে তুলেছে। যে কারণে বাজারে পণ্যের দাম ‘পাগলা ঘোড়ার’ মতো ছুটছে। এসব ব্যবসায়ী এখন দেশের সুনামও নষ্ট করছে। তারপরও কোনোভাবে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। এসব কথা বলেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।

বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তিন দিনব্যাপী ‘নবম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপো-২০২৩’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

শিল্পমন্ত্রী বলেন, এই কালোবাজারিরা-গুদামজাতকারীরা এ দেশকে অস্থিতিশীল করেছে। আলু-পটল, ডিম এ দেশেই হয়। আমদানি করতে হয় না যে দাম বাড়ার কারণ থাকবে। তারপরও দাম নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না অসৎ ব্যবসায়ীদের জন্য। তারা দেশের সুনাম নষ্ট করছে। সরকার এদের কোনোভাবে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারছে না।

তিনি বলেন, জনগণের যদি অংশগ্রহণ না থাকে, সমাজের সবার যদি সহযোগিতা না থাকে, তবে এ বাজার নিয়ন্ত্রণ অসম্ভব। বাজার পাগলা ঘোড়ার মতো চলছে। এটা থামাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, তাদের (কালোবাজারি) কোনো ক্ষমা নেই। তারা মানুষের মধ্যে নেই, ওদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব নেই, মানবতা কাজ করে না।

প্রকৃত ব্যবসায়ীদের এসব কালোবাজারিদের প্রতিহত করার আহ্বান জানিয়ে শিল্পমন্ত্রী বলেন, যারা মানুষকে কষ্ট দিচ্ছে, দুঃসময়ের সুযোগ নিচ্ছে, তারা দেশপ্রেমী নয়। আপনাদের আমি বলবো, ওদের গ্রহণ করবেন না। ওদের প্রতি সচেতন থাকা দরকার। যেন আপনাদের প্রভাবিত না করে।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেন, প্রকৃত ব্যবসায়ীদের যে চরিত্র রয়েছে সেটা অসাধু ব্যবসায়ীদের থেকে আলাদা। অসাধু চোরাকারবারিদের জন্য অনেক সময় প্রকৃত ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হন। প্রকৃত ব্যবসায়ীদের আমরা শ্রদ্ধা করি, সম্মান করি। তাদের কোনো রকম অসম্মান করার ইচ্ছা সরকারের নেই।

অনুষ্ঠানে ঢাকায় নিযুক্ত ইতালির রাষ্ট্রদূত অ্যান্টোনিও আলেসান্দ্রো, ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলম, বাংলাদেশ সিড অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আনিস উদ দৌলা, মেলা কমিটির চেয়ারপারসন ও প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের প্রধান নির্বাহী আহসান খান চৌধুরী, বাপার সাধারণ সম্পাদক ইকতাদুল হক, সাবেক সহ-সভাপতি শোয়েব হাসানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে তিন দিনব্যাপী নবম বাপা ফুডপ্রো ইন্টারন্যাশনাল এক্সপোর পর্দা উঠেছে আজ। চলবে শনিবার পর্যন্ত। প্রতিদিন সকাল ১০টায় শুরু হয়ে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত চলবে, যা সবার জন্য উন্মুক্ত। এ মেলায় প্রদর্শনী ছাড়াও কারিগরি সেশনে দেশ-বিদেশে এ খাতের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা উপস্থিত থাকবেন। এছাড়া অংশগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে দেশীয় প্রতিষ্ঠানের বিজনেস ম্যাচিং সেশনের ব্যবস্থাও থাকছে এ মেলায়।

মেলায় ভারত, চীন, জার্মানি, ইতালি, যুক্তরাষ্ট্র, সুইজারল্যান্ড, স্লোভেনিয়াসহ প্রায় ২০টি দেশের শতাধিক প্রতিষ্ঠান নিজেদের পণ্য এবং সেবা প্রদর্শন করছে। এ মেলার সঙ্গে ১১তম এগ্রো বাংলাদেশ এক্সপো ২০২৩ এবং ইনডিয়েন্ট এক্সপো ২০২৩ নামে আরও দুটি মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ২০১৫ সাল থেকে এসব মেলার আয়োজন করে আসছে বাংলাদেশ অ্যাগ্রো প্রসেসরস অ্যাসোসিয়েশন (বাপা)।

পূর্ববর্তী নিবন্ধলাখের নিচে নামলো সোনা
পরবর্তী নিবন্ধবাংলাদেশে হালাল মাংস রপ্তানি করতে চায় মেক্সিকো