নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশে ডলার সংকটের কারণে বাজারের অবস্থা টালমাটাল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ডলার বিক্রি করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর বড় ধাক্কা লেগেছে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। মাত্র দুই বছর তিন মাসে ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রিজার্ভ নেমে এসেছে ১৬ বিলিয়নের ঘরে।
মূলত নিত্যপণ্যের আমদানি অব্যাহত রাখতে রিজার্ভের ডলার বিক্রি করে এলসি বিল পরিশোধ করছে বাংলাদেশ ব্যাংক। চলতি ২০২৩-২৫ অর্থবছরের পাঁচ মাসেই ৬ বিলিয়ন ডলার বিক্রি হয়েছে। বিক্রির বিপরীত রপ্তানি আয় ও রেমিট্যান্সও তুলনামূলক কম। বিগত পাঁচ মাসেই ৫ দশমিক ৩৭ বিলিয়ন ডলার কমেছে।
রিজার্ভ বাড়াতে নানামুখী পদক্ষেপের পরও ইতিবাচক ফলাফল আসছে না। বর্তমানে গ্রস নিট রিজার্ভের (জিআইআর) পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ দশমিক ৪০ বিলিয়ন। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) হিসাবে ব্যবহারযোগ্য রিজার্ভ প্রায় ১৬ বিলিয়ন ডলার।
এমন পরিস্থিতিতে আইএমএফের ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) ৩২৭ মিলিয়ন ডলারের ঋণ ছাড়ে রিজার্ভে কিছুটা হলেও স্বস্তি মিলবে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, আইএমএফের ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার ঋণের দ্বিতীয় কিস্তি সংস্থাটির বোর্ড সভায় অনুমোদনের জন্য তোলা হচ্ছে ১২ ডিসেম্বর। বোর্ডে অনুমোদন হলেই ওই ঋণের দ্বিতীয় কিস্তির প্রায় ৬৮১ মিলিয়ন ডলার ১৩ ডিসেম্বর ছাড় পেতে যাচ্ছে। যা রিজার্ভে কিছুটা স্বস্তি আনবে।
অপরদিকে বাজেট ঘাটতি মেটাতে এডিবি থেকে ৩২৭ মিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা চলতি মাসেই ছাড় হবে। আইএমএফ ও এডিবির দুই ঋণ মিলে ১ দশমিক শূন্য ৮ বিলিয়ন ডলার রিজার্ভে যোগ হবে। এতে রিজার্ভ পতন কিছুটা হলেও ঠেকানো যাবে।
২০২১ সালের আগস্ট মাসে বাংলাদেশের রিজার্ভ রেকর্ড ৪৮ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যায়। এরপর থেকে ধারাবাহিকভাবে পতন শুরু হয় বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে। যা আর কোনোভাবেই ঠেকানো সম্ভব হয়নি।
চলতি অর্থবছরের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত রিজার্ভ থেকে ডলার বিক্রির অঙ্ক ৫ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন ডলার। সে হিসাবে প্রতি মাসে গড়ে ১ দশমিক ১৮ বিলিয়ন করে ডলার বিক্রি হয়েছে। বুধবার (৬ ডিসেম্বর) পর্যন্ত ডলার বিক্রি ছিল ৫ দশমিক ৯৬ বিলিয়ন।