নিউজ ডেস্ক : বিদায়ের পথে থাকা ২০২৩ সালের শেষ সপ্তাহে দেশের শেয়ারবাজারে মূল্যসূচকের পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে কমেছে লেনদেন। এই পতনের মধ্যেও প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন ৭ হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়ে গেছে।
চলতি ২০২৩ সালের আরও একদিন বাকি আছে। তবে ৩১ ডিসেম্বর রোববার ব্যাংক হলিডে। ফলে ৩১ ডিসেম্বর ব্যাংকিং কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এ কারণে শেয়ারবাজারও লেনদেন হবে না। সুতরাং চলতি বছর শেয়ারবাজারে আর লেনদেন হচ্ছে না। এ হিসেবে বছরের শেষ কার্যদিবস ছিলো গত বৃহস্পতিবার।
গত সপ্তাহজুড়ে দেশের শেয়ারবাজার ছিলো বেশি অস্থির। তবে কয়েকটি মিউচুয়াল ফান্ড দাম বাড়ার ক্ষেত্রে বড় ধরনের দাপট দেখিয়েছে। সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৮৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৮৩টির। আর ২১১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
দাম অপরিবর্তিত থাকা বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন ধরে ফ্লোর প্রাইসে (সর্বনিম্ন দাম) আটকে রয়েছে। ক্রেতা না থাকায় এসব প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট বিক্রি করতে পারছেন না বিনিয়োগকারীরা।
অর্ধেকের বেশি প্রতিষ্ঠান ক্রেতা সংকট থাকায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৭ লাখ ৮০ হাজার ৮৪৯ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৭ লাখ ৭৩ হাজার ৭০৬ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৭ হাজার ১৪৩ কোটি টাকা বা দশমিক ৯২ শতাংশ। ।
এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স কমেছে ২ দশমিক ৭৯ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১৭ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট বা দশমিক ২৮ শতাংশ। প্রধান মূল্যসূচকের সঙ্গে কমেছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে এই সূচকটি কমেছে দশমিক ৭৫ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি কমে ১২ দশমিক ৫৪ পয়েন্ট বা দশমিক ৬০ শতাংশ।
আর ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক গত সপ্তাহে কমেছে ১ দশমিক ৩১ পয়েন্ট বা দশমিক ১০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে দশমিক ৭৮ পয়েন্ট বা দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ।
সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কমেছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৫০৪ কোটি ১১ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫৮৫ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন কমেছে ৮১ কোটি ৪৬ লাখ টাকা বা ১৩ দশমিক ৯১ শতাংশ।
আর সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে মোট লেনদেন হয়েছে ২ হাজার ১৬ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে মোট লেনদেন হয় ২ হাজার ৯২৭ কোটি ৮৬ লাখ টাকা। সে হিসেবে মোট লেনদেন কমেছে ৯১১ কোটি ৪০ লাখ টাকা বা ৩১ দশমিক ১৩ শতাংশ। মোট লেনদেন বেশি হারে কমার কারণ গত সপ্তাহে এক কার্যদিবস কম লেনদেন হয়েছে।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশনের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০২ কোটি ৩৪ লাখ টাকা, যা মোট লেনদেনের ৫ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম শেয়ার লেনদেন হয়েছে ১০০ কোটি ৯৫ লাখ টাকা। ৯২ কোটি ১৭ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- অলিম্পিক এক্সসরিজ, খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং, সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস, ইন্ট্রাকো রি-ফুয়েলিং স্টেশন, রূপালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, প্রাইম ফাইন্যান্স ফার্স্ট মিউচুয়াল ফান্ড এবং প্যাসেফিক ডেনিমস।