সাড়ে সাতশ কোটি টাকা ছাড়ালো লেনদেন

নিউজ ডেস্ক : আতঙ্ক কেটে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ফেরার ইঙ্গিত দিচ্ছে দেশের শেয়ারবাজার। ধারাবাহিকভাবে মূল্যসূচকের বড় উত্থানের পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। একই সঙ্গে প্রায় প্রতিদিনই দাম বাড়ার তালিকায় নাম লেখাচ্ছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর থেকেই শেয়ারবাজারে এই ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।

আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবারও (১১ জানুয়ারি) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) সবকয়টি মূল্যসূচকের মোটামুটি বড় উত্থান হয়েছে। একই সঙ্গে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠান। ডিএসইতে লেনদেন বেড়ে সাড়ে সাতশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে বড় উত্থান হলো।

এর আগে নির্বাচন ঘিরে দেখা দেওয়া রাজনৈতিক অস্থিরতার আশঙ্কায় দেশের শেয়ারবাজারে দেখা দেয় মন্দা প্রবণতা। অধিকাংশ দিন বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি মূল্যসূচকের পতন হয়। একই সঙ্গে লেনদেন আশঙ্কাজনক হারে কমে নেমে যায় তিনশ কোটি টাকার নিচে। তবে সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পরেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে শেয়ারবাজার। মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ধারাবাহিকভাবে বাড়ছে লেনদেনের গতি।

বৃহস্পতিবার লেনদেনের শুরু থেকেই ইতিবাচক ধারা দেখা যায় শেয়ারবাজারে। ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয় প্রায় সবকয়টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। এতে লেনদেন শুরু হতেই ডিএসইর প্রধান সূচক ৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। শুরুতে দেখা দেওয়া ইতিবাচক ধারা লেনদেনের পুরো সময় জুড়েই অব্যাহত থাকে। এমনকি লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাও বাড়ে।

বাজারে বিক্রেতার তুলনায় ক্রেতার চাপ বেশি থাকায় দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১১৭টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ৬০টির। এছাড়া ১৭৮টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। দাম বাড়ার তালিকা বড় হওয়ার পাশাপাশি একাধিক প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম ফ্লোর প্রাইস ভেঙে উপরে উঠে এসেছে।

এতে দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১৬ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ৩০১ পয়েন্টে উঠে এসেছে। এর মাধ্যমে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণের পর লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৫৭ পয়েন্ট।

এদিকে বৃহস্পতিবার অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ আগের দিনের তুলনায় ৪ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৯ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১১৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। এর মাধ্যমে শেষ পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই সূচক বাড়লো।

সবকয়টি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে সাড়ে সাতশ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৭৫২ কোটি ৮৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫০৮ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ২৪৪ কোটি ৩৭ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত বছরের ১৩ ডিসেম্বরের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।

এই লেনদেন বাড়াতে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে দেশবন্ধু পলিমারের শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ১৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জেনেক্স ইনফোসিসের শেয়ার লেনদেন হয়েছে ২২ কোটি ৭৭ লাখ টাকার। ২০ কোটি ৪৮ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- ওরিয়ন ইনফিউশন, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, এমারেল্ড অয়েল, রূপালী ব্যাংক, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম এবং বসুন্ধরা পেপার।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৮ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ১৯০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬৪টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪৪টির এবং ৮২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১ কোটি ১৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৬ কোটি ৫৮ লাখ টাকা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমিডল্যান্ড ব্যাংক থেকে স্টার্টআপ ঋণ নেবে এগ্রোমুকম, চুক্তি সই
পরবর্তী নিবন্ধশপথ নিলেন ২৫ মন্ত্রী ও ১১ প্রতিমন্ত্রী