মূল্যস্ফীতি কমাতে নীতি সুদহার বাড়ালো বাংলাদেশ ব্যাংক

নিউজ ডেস্ক : দেশের চলমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি রোধে টাকার সরবরাহ কমানোর পাশাপাশি নীতি সুদহার বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে চলতি অর্থবছরের জানুয়ারি-জুন মেয়াদের জন্য নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণাকালে এ কথা জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।

গভর্নর আব্দুর রউফ বলেন, আগামী জুন মাসের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ছয় শতাংশে নামিয়ে আনতে চায় কেন্দ্রীয় ব্যাংক। এ লক্ষ্যে নতুন মুদ্রানীতিতে নীতি সুদহার ২৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর, বিএফআইইউয়ের প্রধান কর্মকর্তা, প্রধান অর্থনীতিবিদ, গবেষণা বিভাগের নির্বাহী পরিচালক, বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও সহকারী মুখপাত্ররা।

গভর্নর বলেন, নতুন সিদ্ধান্ত মতে নীতি সুদহার ৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৮ শতাংশ করা হচ্ছে। এর ফলে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে অন্য ব্যাংকগুলো যে টাকা ধার করবে, তার সুদহার বাড়বে। অর্থাৎ বাংলাদেশ ব্যাংক আরও সংকোচনমূলক মুদ্রা সরবরাহের দিকে হাঁটছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, রিভার্স রেপো (বর্তমান নাম স্ট্যান্ডিং ডিপোজিট ফ্যাসিলিটি বা এসডিএফ) নিম্নসীমার সুদহার ৫ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ৭৫ শতাংশীয় পয়েন্ট বাড়িয়ে ৬ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। বাজারে উদ্বৃত্ত টাকা থাকলে বাংলাদেশ ব্যাংক রিভার্স রেপোর মাধ্যমে টাকা তুলে নেয়।

নীতি সুদহার করিডরের ঊর্ধ্বসীমা স্পেশাল রেপো বা এসএলএফের (স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি) সুদহার ৯ দশমিক ৭৫ শতাংশ থেকে ২৫ বেসিস পয়েন্ট কমিয়ে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশ করা হয়েছে। এতে সংকটে পড়া ব্যাংক বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ধার করতে কিছুটা ব্যয় কমবে।

চলতি অর্থবছরের প্রথমার্ধের (ডিসেম্বর পর্যন্ত) জন্য ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবৃদ্ধির লক্ষ্য ধরা হয়েছিল ১০ দশমিক ৯ শতাংশ। আলোচিত সময়ে মূল্যস্ফীতির মতো ঋণ প্রবৃদ্ধির এ লক্ষ্যও অর্জিত হয়নি। গত নভেম্বর পর্যন্ত বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি অর্জিত হয়েছে ৯ দশমিক ৯০ শতাংশ। যা লক্ষ্যের চেয়ে ১ শতাংশ কম।

গত ডিসেম্বর পর্যন্ত রিজার্ভ মুদ্রার প্রবৃদ্ধি অপরিবর্তিত থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। যদিও নভেম্বর পর্যন্ত রিজার্ভ মুদ্রার বার্ষিক প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক ১ দশমিক ৭৩ শতাংশে নেমেছে। ব্রড মানি বা ব্যাপক মুদ্রার প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যও অর্জিত হয়নি, যা বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধমূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে প্রাধান্য দিয়ে মুদ্রানীতি ঘোষণা
পরবর্তী নিবন্ধএলডিসি থেকে উত্তরণের পরও চীনের কাছে শুল্কমুক্ত সুবিধা চাইলেন বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী