দেড় বছর পর পুঁজিবাজারে ফ্লোর প্রাইস ছাড়াই লেনদেন

নিউজ ডেস্ক : নির্বাচনের পর প্রথম সপ্তাহের মতো দ্বিতীয় সপ্তাহেও টানা ঊর্ধ্বমুখী ছিল পুঁজিবাজার। গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে চার কার্যদিবসেই সূচকের বড় উত্থান হয়েছে।

দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি বেড়েছে লেনদেনের গতি। গত সপ্তাহে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) বাজার মূলধন দেড় হাজার কোটি টাকার বেশি বেড়েছে। সেই সঙ্গে দৈনিক গড় লেনদেন বেড়েছে ৩২ শতাংশের বেশি। আর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৩৫ পয়েন্টের বেশি।

এরই ধরাবাহিকতায় ফ্লোর প্রাইস (শেয়ারের সর্বনিম্ন সীমা) আরোপের প্রায় দেড় বছর পর গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) এক আদেশে তা তুলে দিয়েছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। ফলে রোববার (২১ জানুয়ারি) থেকে ৩৫টি ছাড়া বাকি সকল কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিটগুলো ফ্লোর প্রাইস ছাড়াই লেনদেন করবে। সূচকে প্রভাব ফেলতে পারে এমন সম্ভাবনার কারণে কোম্পানিগুলোতে ফ্লোর প্রাইস বহাল রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম রাইজিংবিডিকে বলেন, পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে কমিশন ৩৫টি কোম্পানি বাদে বাকিগুলোর ফ্লোর প্রাইস তুলে দিয়েছে। ফ্লোর প্রাইস তুলে দেওয়া কোম্পানিগুলোতে স্বাভাবিক সার্কিট ব্রেকার কার্যকর হবে। আর ফ্লোর প্রাইসের আওতায় থাকা কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। কমিশন আশা করছে, ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার কারণে বাজারে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং বাজারে গতি ফিরে আসবে। যেসব কোম্পানির ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে সার্কিট ব্রেকার তথা এক দিনে মূল্যবৃদ্ধি বা কমার সীমা আরোপ থাকবে। সার্কিট ব্রেকারের সর্বনিম্ন সীমা পৌনে ৪ শতাংশ থেকে সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ। অর্থাৎ এক দিনে এসব কোম্পানির দাম সর্বোচ্চ ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমতে বা বাড়তে পারবে।

তথ্য মতে, পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতন ঠেকাতে না পেরে, গত চার বছরে কয়েক দফায় শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি। বৈশ্বিক সংকটের কারণে পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতন রোধে প্রথমবার ২০২০ সালের ১৯ মার্চ ফ্লোর প্রাইস আরোপ করা হয়, যা পুরোপুরি তুলে নেওয়া হয় ২০২১ সালের ১৭ জুলাই। এরপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের প্রভাবে ২০২২ সালের ২৮ জুলাই দ্বিতীয় দফায় সব শেয়ারের দরে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে সংস্থাটি। পরবর্তীতে ওই বছরের ২১ ডিসেম্বর ১৬৭ শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড থেকে ফ্লোর প্রাইস উঠিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রতিদিন একটি-দুটি শেয়ার কেনাবেচার বিপরীতে ১ শতাংশ হারে দর কমতে থাকায় ২০২২ সালের ১ মার্চ তৃতীয় দফায় ফের ১৬৭ শেয়ারে ফ্লোর প্রাইস আরোপ করে বিএসইসি।

ফ্লোর প্রাইস প্রত্যাহার না করা কোম্পানিগুলো হলো- আনোয়ার গ্যালভানাইজিং, বারাকা পাওয়ার, ব্রিটিশ-আমেরিকান টোব্যাকো, বেক্সিমকো লিমিটেড, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্‌ল, বিএসআরএম লিমিটেড, বিএসআরএম স্টিল, কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডিবিএইচ, ডরিন পাওয়ার, এনভয় টেক্সটাইল, গ্রামীণফোন, এইচআর টেক্সটাইল, আইডিএলসি, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, ইসলামী ব্যাংক, কেডিএস এক্সেসরিজ, খুলনা পাওয়ার, কাট্টলি টেক্সটাইল, মালেক স্পিনিং, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, ন্যাশনাল পলিমার, ওরিয়ন ফার্মা, পদ্মা অয়েল, রেনেটা, রবি আজিয়াটা, সায়হাম কটন, শাশা ডেনিমস, সোনালী পেপার, সোনার বাংলা ইনস্যুরেন্স, শাইনপুকুর সিরামিকস, শাহজিবাজার পাওয়ার, সামিট পাওয়ার ও ইউনাইটেড পাওয়ার।

পূর্ববর্তী নিবন্ধরাজশাহীতে তীব্র শীতে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা
পরবর্তী নিবন্ধভৈরবে ট্রেনে কাটা পড়ে এক বছরে ৭১ মৃত্যু