নিউজ ডেস্ক : ২ লাখ ৬০ হাজার মেট্রিক টন সার কেনার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। এর মধ্যে ১ লাখ ২০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া, ৮০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি, ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি এবং ৩০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি রয়েছে। স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান এবং সৌদি আরব, রাশিয়া, কাতার ও মরক্কোর প্রতিষ্ঠান থেকে এ সার কেনার সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে সরকার। যা কিনতে প্রায় ১ হাজার ১৪২ কোটি টাকা খরচ হবে।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সার কেনার প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটির আহ্বায়ক অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। নতুন সরকারের অধীনে এটি সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির প্রথম বৈঠক।
বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানানো হয়, কৃষি মন্ত্রণালয় থেকে ডিএপি, টিএসপি এবং এমওপি সার কেনার চারটি প্রস্তাব নিয়ে আসা হয়। চারটিই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় সৌদি আরর’র মা’আদেন থেকে ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করা হবে। এ সার আমদানির ব্যয় ধরা হয়েছে ২৫৯ কোটি ১৬ লাখ টাকা। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) মাধ্যমে এ সার আমদানি করা হবে।
বিএডিসি’র মাধ্যমে মরক্কোর ওসিপি এস.এ থেকে আমদানি করা হবে ৩০ হাজার মেট্রিক টন টিএসপি সার। এ সারও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় আমদানি করা হবে। এ সার আমদানির খরচ ধরা হয়ছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার। সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১২৭ কোটি ৩৮ লাখ টাকা।
একই সঙ্গে মরক্কো’র ওসিপি থেকে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের চুক্তির আওতায় ৪০ হাজার মেট্রিক টন ডিএপি সার আমদানি করার প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এ সার আমদানি করতে খরচ ধরা হয়েছে ২ কোটি ১৯ লাখ মার্কিন ডলার, সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ২৪০ কোটি ৯০ লাখ টাকা।
কৃষি মন্ত্রণালয়ের আর একটি প্রস্তাবের মধ্যে রয়েছে রাশিয়া থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন এমওপি সার আমদানি করা। রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে রাশিয়ার জেএসসি ফরিং ইকোমিক করপোরেশন ‘প্রোডিন্টরগ’ ও বিএডিসি’র মধ্যে সই হওয়া চুক্তির আওতায় চতুর্থ লটে এ সার আমদানি করা হবে। এ সার আমদানিতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৯০ লাখ ৬৩ হাজার মার্কিন ডলার, সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ৯৯ কোটি ৬৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা।
অন্যদিকে সৌদি আরব ও কাতারের প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশীয় একটি প্রতিষ্ঠান থেকে সার কেনার চারটি প্রস্তাব নিয়ে আসে শিল্প মন্ত্রণালয়। চারটি প্রস্তাবই অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে কাতারের কাতার কেমিক্যাল অ্যান্ড পেট্রোকেমিক্যাল মার্কেটিং অ্যান্ড ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি (মুনতাজাত) থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন বাল্ক গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনা হবে। রাষ্ট্রীয় চুক্তির মাধ্যমে এ সার কিনতে খরচ ধরা হয়েছে ৯৪ লাখ ২ হাজার ৬০০ মার্কিন ডলার, সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৩ কোটি ৪২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাকি তিন প্রস্তাবের মধ্যে সৌদি আরবের সাবিক এগ্রি-নিউট্রিয়েন্টস কোম্পানি থেকে ইউরিয়া সার কেনার দুটি প্রস্তাব রয়েছে। রাষ্ট্রীয় চুক্তির আওতায় সৌদি আরবের এ প্রতিষ্ঠান থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন করে দুই লটে মোট ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করা হবে।
প্রতি লটের জন্য ৯৪ লাখ ২ হাজার ৬০০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৩ কোটি ৪২ লাখ ৮৬ হাজার টাকা ব্যয় হবে। অর্থাৎ ৬০ হাজার টন ইউরিয়া সার আমদানি করতে মোট খরচ হবে কোটি ২০৬ ৮৫ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাকি প্রস্তাবটিও ইউরিয়া সার কেনা সংক্রান্ত। দেশীয় প্রতিষ্ঠান কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো) থেকে ৩০ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া সার কেনা হবে। কাফকো থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ১৩তম লটে এই ইউরিয়া কেনা হবে। এতে মোট ব্যয় হবে ৯৪ লাখ ৯৮ হাজার ৭৫০ মার্কিন ডলার বা সমপরিমাণ বাংলাদেশি মুদ্রায় ১০৪ কোটি ৪৮ লাখ ৬২ হাজার ৫০০ টাকা।