নিউজ ডেস্ক : ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর দেশের শেয়ারবাজারে বেশ ইতিবাচক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। ধারাবাহিকভাবে লেনদেন বাড়ার পাশাপাশি মূল্যসূচকেও ফিরেছে ইতিবাচক ধারা। প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
প্রায় দেড় বছর পর গত বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) বিকেলে শেয়ারবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথম ধাপে ৩৫ প্রতিষ্ঠান বাদে সবগুলো থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়।
ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে রোববার লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২১৪ পয়েন্ট পড়ে যায়। তবে শেষ দিকে বিক্রির চাপ কমায় প্রধান সূচক ৯৬ পয়েন্ট কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।
পরের কার্যদিবস সোমবার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি বাড়ে সবকটি মূল্যসূচক। একই সঙ্গে প্রায় ছয় মাস পর ডিএসইতে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়। এ পরিস্থিতিতে সোমবার বিকেলে আরও ২৩ প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৩ জানুয়ারি) লেনদেনের শুরুতে নতুন করে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া ২৩ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের বিপুল বিক্রির চাপ আসে। এতে লেনদেনের শুরুতেই সূচক ঋণাত্মক হয়ে পড়ে। লেনদেনের প্রথম মিনিটেই ডিএসইর প্রধান সূচক ২৯ পয়েন্ট কমে যায়। তবে লেনদেনের সময় আধাঘণ্টা গড়ানোর আগেই সূচক ইতিবাচক ধারায় ফিরে। লেনদেনের শেষ পর্যন্ত সেই ধারা অব্যাহত থাকে।
অবশ্য এরপরও দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকা বড় হয়েছে। দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ১২৬টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২৭টির। আর ৪০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। এরপরও ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ২১ পয়েন্ট বেড়ে ৬ হাজার ২৭৬ পয়েন্টে উঠে এসেছে।
অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ৩ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৩৮৪ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ১০ পয়েন্ট বেড়ে ২ হাজার ১৫৮ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৭৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৪২ কোটি ২২ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন বেড়েছে ১৩৪ কোটি ৭২ লাখ টাকা। লেনদেন শুধু আগের কার্যদিবসের তুলনায়ই বাড়েনি, গত বছরের ৫ জুনের পর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
এই লেনদেন বাড়াতে সব থেকে বড় ভূমিকা রেখেছে ফরচুন সুজের শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ৬২ কোটি ৫৩ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশনের ৩৩ কোটি ৮১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩১ কোটি ১৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে ওরিয়ন ইনফিউশন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- দেশবন্ধু পলিমার, ব্র্যাক ব্যাংক, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম, রূপালী ব্যাংক, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস, কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স এবং ফু-ওয়াং ফুড।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ৭৬ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৭৫টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১০৬টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৫০টির এবং ১৯টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ২১ কোটি ৮১ লাখ টাকা।