আজও পতনে শেয়ারবাজার, হাজার কোটি টাকার নিচে লেনদেন

নিউজ ডেস্ক : ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর দুই কার্যদিবস মূল্যসূচক কিছুটা বাড়ার পর শেয়ারবাজারে টানা বড় দরপতন দেখা দিয়েছে। আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় বৃহস্পতিবার দেশের শেয়ারবাজারে আবার বড় দরপতন হয়েছে।

প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন হয়েছে। সেই সঙ্গে ডিএসইতে লেনদেন কমে হাজার কোটি টাকার নিচে চলে এসেছে।

প্রায় দেড় বছর পর গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শেয়ারবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত কথা জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথম ধাসে ৩৫ প্রতিষ্ঠান বাদে সবগুলো থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়।

ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়ার পর মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে রোববার লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধানসূচক ২১৪ পয়েন্ট পড়ে যায়। তবে শেষ দিকে বিক্রির চাপ কমায় প্রধান সূচক ৯৬ পয়েন্ট কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

পরের কার্যদিবস সোমবার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি বাড়ে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে প্রায় ছয় মাস পর ডিএসইতে হাজার কোটি টার ওপরে লেনদেন হয়। এ পরিস্থিতিতে সোমবার বিকেলে আরও ২৩ প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেওয়া হয়।

পরের কার্যদিবস মঙ্গলবার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও বাড়ে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়। তবে বুধবার লেনদেন কমার পাশাপাশি কমে সবকটি মূল্যসূচক।

এ পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতে সূচকে ইতিবাচক প্রভাব পড়ে। এতে এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধান সূচক ২৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়।

তবে প্রথম ঘণ্টার লেনদেন শেষ হওয়ার আগেই দাম বাড়ার তালিকা থেকে একের পর এক প্রতিষ্ঠান দাম কমার তালিকায় চলে আসে। লেনদেনের সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সেই প্রবণতা বাড়তে থাকে। ফলে একদিকে দরপতনের তালিকা বড় হয়, অন্যদিকে সবকটি মূল্যসূচকের বড় পতন দিয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়।

দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৮৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮২টির। আর ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।

অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৭০ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৫৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।

সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনের পরিমাণও কিছুটা কমেছে। তবে হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হয়েছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৭৬ কোটি ৯৪ লাখ টাকা। সে হিসেবে লেনদেন কমেছে ৩ কোটি ৭৩ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৩৯ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফরচুন সুজ ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং।

এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- কর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই অ্যালুমেনিয়াম, আইএফআইসি ব্যাংক, ওরিয়ন ইনফিউশ, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, অলিম্পিক এক্সোসরিজ এবং সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।

অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৫৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ২৬০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৮টির এবং ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধগণমাধ্যমের পূর্ণাঙ্গ স্বাধীনতা চাই: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধ‘৬৪৮ এমপি’র বিষয়ে প্রয়োজনে স্পষ্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হবে: আইনমন্ত্রী