নিউজ ডেস্ক :
দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলা চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তীব্র তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। শনিবার (৬ এপ্রিল) এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা চলতি মৌসুমে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
টানা ৭ দিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে জনজীবনে নেমে এসেছে অসহনীয় দুর্ভোগ। তীব্র রোদে ফসলি জমির মাটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে।
চুয়াডাঙ্গা প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার সূত্রে জানা যায়, ১ এপ্রিল সোমবার চুয়াডাঙ্গায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পরদিন মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) তাপমাত্রা কিছুটা কমে দাঁড়ায় ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বুধবার (৩ এপ্রিল) পুনরায় তাপমাত্রার পারদ ওঠে ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) তাপমাত্রা ছিল ৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবং সর্বশেষ শুক্রবার (৫ এপ্রিল) বেলা তিনটায় এ জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ শনিবার বেলা তিনটায় তাপমাত্রা পারদ আরও ২ ডিগ্রি বেড়ে ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে উঠেছে।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়া পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, সূর্যের প্রখরতা ও বাতাসে অতিরিক্ত আর্দ্রতার কারণে ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। বৃষ্টি না হওয়া পর্যন্ত এ অবস্থার পরিবর্তন হবে না। আর খুব নিকটে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনাও তেমন নেই। তাই জেলার ওপর দিয়ে চলমান এ তাপপ্রবাহ অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, টানা কয়েকদিনের ভ্যাপসা গরমে জনজীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এই গরমে রোজাদার ব্যক্তিরা বেশি কষ্টে আছেন। খুব প্রয়োজন ছাড়া তারা বাইরে বের হচ্ছেন না। সড়কেও মানুষের তেমন চলাচল না থাকায় যাত্রীশূন্য যানবাহন।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার কৃষক আবু তালেব বলেন, তীব্র রোদের কারণে মাঠে কাজ করতে খুব কষ্ট হচ্ছে। গরম থেকে বাঁচতে তারা খুব ভোরে মাঠে যাচ্ছেন, যাতে সূর্যের তেজ শুরু হওয়ার আগেই কাজ শেষ করতে পারেন।
জেলার জীবননগর উপজেলার একটি পোশাকের দোকানি জাহাঙ্গীর আলম জানান, তীব্র রোদ আর ভ্যাপসা গরমের কারণে সারাদিন তেমন একটা ক্রেতা সমাগম নেই। তবে ইফতারের পর বাড়ছে বেচাকেনা।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার মুরগি খামারি আফজালুল হক জানান, এই গরমে মুরগি অসুস্থ হয়ে পড়েছে। প্রতিদিনই কমবেশি মুরগি মারা যাচ্ছে। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে সবসময় ফ্যান চালিয়েও রাখা যাচ্ছে না।
তীব্র তাপদাহে মাঠের ফসল সুরক্ষায় কৃষকদের নানা পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি অফিস।চুয়াডাঙ্গা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিভাস চন্দ্র সাহা বলেন, তাপপ্রবাহের ক্ষতি থেকে বাঁচতে বোরো ধানের জমিতে পর্যাপ্ত পানি ধরে রাখা, ধানের শিষে দানা শক্ত না হওয়া পর্যন্ত জমিতে অবশ্যই ২ থেকে ৩ ইঞ্চি পানি রাখতে হবে। আম গাছের গোড়ায় পর্যাপ্ত সেচ প্রদান করা; প্রয়োজনে গাছের শাখা-প্রশাখায় পানি স্প্রে করা যেতে পারে। সবজি খেতে মাটির ধরন বুঝে প্রয়োজন অনুযায়ী ২ থেকে ৩টি সেচের ব্যবস্থা করা।