নিউজ ডেস্ক : টানা চার কার্যদিবস ঊর্ধ্বমুখী থাকার পর সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবস মঙ্গলবার দেশের শেয়ারবাজারে কিছুটা মূল্য সংশোধন হয়েছে। বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমার পাশাপাশি কমেছে মূল্যসূচক। তবে লেনদেনের পরিমাণ বেড়েছে।
প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন বেড়ে ১১’শ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। এর মাধ্যমে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারির পর বা প্রায় তিন মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে।
এছাড়া দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে প্রায় সবকটি ব্যাংক। ফলে দাম বাড়ার থেকে দাম কমার তালিকায় প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠান থাকলেও সূচকের বড় পতন হয়নি।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম কমার তালিকায় বেশি প্রতিষ্ঠান থাকলেও বেড়েছে মূল্যসূচক। একই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের পরিমাণ।
এর আগে গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। চলতি সপ্তাহের প্রথম দুই কার্যদিবসও ঊর্ধ্বমুখী থাকে শেয়ারবাজার।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মেলে। প্রথম ঘণ্টার লেনদেনে ডিএসইর প্রধান সূচক ৪০ পয়েন্ট বেড়ে যায়। একই সঙ্গে দাম বাড়ার সর্বোচ্চ সীমা স্পর্শ করে বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান।
তবে লেনদেনের শেষ দিকে মুনাফা তুলে নিতে এক শ্রেণির বিনিয়োগকারীরা শেয়ার বিক্রির চাপ বাড়ান। এতে দাম বাড়ার তালিকা থেকে দাম কমার তালিকায় চলে আসে দেড়শোর বেশি প্রতিষ্ঠান। ফলে সূচক ঋণাত্মক হয়ে দিনের লেনদেন শেষ হয়েছে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে ১৩১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২২২টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৪১টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১ পয়েন্ট কমে ৫ হাজার ৭২৫ পয়েন্টে নেমে এসেছে। অন্য দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ২৫৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৬ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৪০ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
দাম বাড়ার তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও সূচক সামান্য কমার কারণে প্রায় সবকটি ব্যাংক দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। তালিকাভুক্ত ৩৬টি ব্যাংকের মধ্যে মাত্র একটির দাম কমেছে। বিপরীতে দাম বেড়েছে ২৬টির।
এদিকে ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ বেড়ে চলতি বছরের ১৪ ফেব্রুয়ারির পর সর্বোচ্চ হয়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ১ হাজার ১০৮ কোটি ৩৪ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ৯৫ কোটি ৬৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে লেনদেন বেড়েছে ১২ কোটি ৭০ লাখ টাকা।
এ লেনদেনে সবচেয়ে বেশি অবদান রেখেছে বেস্ট হোল্ডিংয়ের শেয়ার। কোম্পানিটির ৫৫ কোটি ৮২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিসের ৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ৩৮ কোটি ৮৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে গোল্ডেন সন।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- লাভেলো আইসক্রিম, ওয়াইম্যাক্স ইলেকট্রোড, ওরিয়ন ইনফিউশন, ওরিয়ন ফার্মা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, মালেক স্পিনিং এবং সি পার্ল বিচ রিসোর্ট।
অন্য শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩৪ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেন অংশ নেওয়া ২৪৪টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ১১১টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১১৩টির এবং ২০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১১৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১২ কোটি ৮৫ লাখ টাকা।