নিউজ ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্ব প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের শিশুরাও পিছিয়ে থাকবে না। আধুনিক প্রযুক্তির জ্ঞান দিয়ে আমরা তাদের গড়ে তুলব।
প্রধানমন্ত্রী আজ (মঙ্গলবার) বিকেলে তার সরকারি বাসভবন গণভবনে জাতির পিতার জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভাষণে এসব কথা বলেন।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে জাতির পিতার ৯৯তম, শততম, ১০১তম, ১০২তম, ১০৩তম এবং ১০৪তম জন্মবার্ষিকীর প্রতিযোগিতার বিজয়ী ৩০৪ প্রতিযোগীর মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের শিশু আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। ২০০৮ সালে আমরা ঘোষণা দিয়েছিলাম ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ব। ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা করেছি। এখন আমাদের ঘোষণা হলো, ২০৪১ সালের বাংলাদেশ হবে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’। সেজন্য আমরা স্কুলে স্কুলে কম্পিউটার ল্যাব করে দিয়েছি, কম্পিউটার ট্রেনিং অ্যান্ড ইনকিউবেশন সেন্টার করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে বিশেষ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে।
সরকারপ্রধান বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি তথা ডিজিটাল সিস্টেমের প্রসার আমরা ঘটাচ্ছি। প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে। সেখানে আমাদের ছেলে-মেয়েরা পিছিয়ে থাকবে কেন? তাদেরও সেভাবে একটি আধুনিক প্রযুক্তি জ্ঞান সম্পন্ন জাতি হিসেবে গড়ে তুলব। আর ২০৪১-এর যে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’, আজকের শিশু ও তরুণরাই হবে সেই স্মার্ট বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ কর্ণধার।
তিনি বলেন, তোমরাই বাংলাদেশকে স্মার্ট বাংলাদেশ হিসেবে এগিয়ে নিয়ে যাবে। সেভাবেই আমরা দেশকে গড়তে চাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার শিশুদের সুরক্ষায় অনেক আইন ও নীতিমালা প্রণয়ন করেছে। শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে প্রাক-প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত বিনামূল্য পাঠ্যপুস্তক প্রদান করছে। বৃত্তি-উপবৃত্তি দিচ্ছে, উচ্চ শিক্ষায় বৃত্তি দিচ্ছে। বিভিন্ন জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় এবং ফ্যাশন ডিজাইন, অ্যারোস্পেস, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়সহ শিক্ষার্থীদের মেধা বিকাশে বিভিন্ন বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় করে দিচ্ছে। পাশাপাশি বিভাগীয় পর্যায়ে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠারও উদ্যোগ নিয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারের গৃহীত এসব পদক্ষেপের ফলে আজ স্বাক্ষরতার হার, যা ২০০৬ সালে মাত্র ৪৫ ভাগ ছিল, বর্তমানে ৭৬ দশমিক ৮ ভাগে উন্নীত হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের বৃত্তি প্রদান এবং দুঃস্থদের সহায়তার জন্য তারা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মেমোরিয়াল ট্রাস্ট গঠন করেছি।
তিনি এবং তার ছোট বোন শেখ রেহানা বঙ্গবন্ধুর স্মৃতি বিজড়িত সেই ধানমন্ডির বাড়ি, যেখান থেকে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল, সেটিকে জাদুঘরে পরিণত করেছেন উল্লেখ করে বলেন, শেখ মুজিব তো জনগণের ছিলেন। কাজেই ওই বাড়ির ওপর এখন আমাদের অধিকার নেই। সেখানে মানুষের অধিকার। সেখানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ প্রদানের একটি হলোগ্রামও করা হয়েছে। বাড়িটিতে সেই স্মৃতি ধরে রাখার চেষ্টা হয়েছে যেখান থেকে তিনি বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন, বসবাস করেছেন এবং শেষে সপরিবারে তাকে নির্মমভাবে হত্যাও করা হয়েছিল। কাজেই সেই বাড়ি আমরা দু’বোন ব্যবহার করব না, এটাই আমাদের সিদ্ধান্ত।
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের সভাপতি ও বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী হাশেম খান অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন। জাদুঘরের কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।