নিউজ ডেস্ক ” গত সপ্তাহে লেনদেন হওয়া চার কার্যদিবসের মধ্যে তিন কার্যদিবসেই দেশের শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখিতার দেখা মিলেছে। এতে সপ্তাহজুড়ে প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশি সংখ্যক প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। ফলে এক সপ্তাহে ডিএসইর বাজার মূলধন সাড়ে ৯ হাজার কোটি টাকার ওপরে বেড়েছে।
আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে সাড়ে ১৭ হাজার কোটি টাকার ওপর। তার আগের সপ্তাহে বাড়ে ১০ হাজার কোটি টাকার ওপরে। এতে ঈদের পর লেনদেন হওয়া ১১ কার্যদিবসেই ডিএসইর বাজার মূধন প্রায় সাড়ে ৩৭ হাজার কোটি টাকা বেড়েছে।
গত সপ্তহজুড়ে ডিএসইতে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশপাশি সবকটি মূল্য সূচকও বেড়েছে। সেই সঙ্গে বেড়েছে লেনদেনের গতি। গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে লেনদেনে অংশ নেওয়া ৩২৯টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ৪০টির। আর ২৪টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের দাম বাড়ায় সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসের লেনদেন শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭১ হাজার ৬৩ কোটি টাকা। যা গত সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৬ লাখ ৬১ হাজার ৫০৮ কোটি টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৯ হাজার ৫৫৫ কোটি টাকা বা ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।
আগের সপ্তাহে বাজার মূলধন বাড়ে বেড়েছে ১৭ হাজার ৮৫৯ কোটি টাকা। তার আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া দুই কার্যদিবসে বাজার মূলধন বাড়ে ১০ হাজার ৫৬ কোটি টাকা। ফলে ঈদের পর লেনদেন হওয়া ১১ কার্যদিবসে ডিএসইর বাজার মূলধন বেড়েছে ৩৭ হাজার ৪৭০ কোটি টাকা।
এদিকে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স গত সপ্তাহে বেড়েছে ১৪২ দশমিক ১৫ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গত সপ্তাহের আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ১১১ দশমিক ২৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১২ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে লেনদেন হওয়া দুই কার্যদিবসে সূচকটি বাড়ে ১২৬ দশমিক ৩১ পয়েন্ট। অর্থাৎ ঈদের পর ১১ কার্যদিবসে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে ৩৭৯ পয়েন্ট।
প্রধান মূল্যসূচকের পাশাপাশি বেড়েছে বাছাই করা ভালো কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক। গত সপ্তাহজুড়ে সূচকটি বেড়েছে ২৮ দশমিক ৭৭ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৫০ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৪৭ দশমিক শূন্য ৯ পয়েন্ট। তার আগের সপ্তাহে দুই কার্যদিবসে সূচকটি বাড়ে ৫৩ দশমিক ৫৯ পয়েন্ট।
ইসলামী শরিয়াহ ভিত্তিতে পরিচালিত কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই শরিয়াহ্ সূচকও টানা বেড়েছে। গত সপ্তাহে সূচকটি বেড়েছে ২৫ দশমিক ১৮ পয়েন্ট বা ২ দশমিক ১৩ শতাংশ। আগের সপ্তাহে সূচকটি বাড়ে ৩৭ দশমিক ৪৬ পয়েন্ট বা ৩ দশমিক ২৭ শতাংশ। তার আগের সপ্তাহে দুই কার্যদিবসে সূচকটি বাড়ে ৩৪ পয়েন্ট।
মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বেড়েছে। সপ্তাহের প্রতি কার্যদিবসে ডিএসইতে গড়ে লেনদেন হয়েছে ৬১৫ কোটি ৮২ লাখ টাকা। আগের সপ্তাহে প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয় ৫৬০ কোটি ৪২ লাখ টাকা। অর্থাৎ প্রতি কার্যদিবসে গড় লেনদেন বেড়েছে ৫৫ কোটি ৪০ লাখ টাকা বা ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ।
সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে যমুনা অয়েলের শেয়ার। কোম্পানিটির শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২৯ কোটি ৯৫ লাখ টাকা যা মোট লেনদেনের ৪ দশমিক ৮৬ শতাংশ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা মেঘনা পেট্রোলিয়ামের শেয়ার প্রতিদিন গড়ে লেনদেন হয়েছে ২০ কোটি ১৪ লাখ টাকা। প্রতিদিন গড়ে ১৪ কোটি ২৭ লাখ টাকা লেনাদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে বিচ হ্যাচারি।
এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ দশ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে-ওরিয়ন ফার্মা, আলিফ ইন্ডাস্ট্রিজ, প্রগতি লাইফ ইন্স্যুরেন্স, সি পার্ল বিচ রিসোর্ট, ইউনিলিভার কনজুমার কেয়ার, লাভেলো আইসক্রিম এবং স্যালভো কেমিকেল।