ভীতিকর পরিস্থিতিতে কর্মীরা ডাটা সেন্টার শাটডাউনে বাধ্য হন: পলক

নিউজ ডেস্ক :

কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে ভীতিকর পরিস্থিতিতে রাজধানীর মহাখালীর তিনটি ডাটা সেন্টার শাটডাউন করতে সেখানকার কর্মীরা বাধ্য হন বলে জানিয়েছেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক।

তিনি বলেন, খাজা টাওয়ারসহ মহাখালীতে তিনটি ডাটা সেন্টার রয়েছে। সেগুলোর মধ্যে একটিতে (ত্রাণ পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিচতলায়) সন্ত্রাসীরা আগুন ধরিয়ে দেয়। চারদিকে ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এতে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ওই এলাকায় থাকা অন্য দুটি ডাটা সেন্টারের কর্মীরাও শাটডাউন করতে বাধ্য হন।

রোববার (২৮ জুলাই) বেলা ১১টার দিকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনে (বিটিআরসি) ব্রিফিংয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ১৭ ও ১৮ জুলাই নিরাপত্তাজনিত কারণে কিছু কিছু এলাকায় আমরা সীমিত পরিসরে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ রেখেছিলাম। কিন্তু ১৮ জুলাই বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত তাণ্ডব চালানো হয়। সেসময় মহাখালীর ত্রাণ পুনর্বাসন কেন্দ্রের নিচতলায় একটি ডাটা সেন্টার সম্পূর্ণরূপে পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তথ্য-উপাত্ত ও প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে যে, সেখানে বেশ কিছু চিহ্নিত সন্ত্রাসী পরিকল্পিতভাবে হামলা করে। যারা এরই মধ্যে গ্রেফতার হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এরই মধ্যে তথ্য সংগ্রহও করেছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে, পরিকল্পিতভাবে একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী সেখানে ডাটা সেন্টার পুড়িয়ে দেয়। ওই এলাকায় যে তিনটি ডাটা সেন্টার আছে, সেখানে সোর্স অব ইন্টারনেট ও পাওয়ার অর্থাৎ, ইলেকট্রিসিটির ক্যাবলগুলোও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। তখন সেসব ডাটা সেন্টারে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যারা কাজ করছিলেন, তারা ভীতিকর পরিস্থিতিতে ডাটা সেন্টার শাটডাউন করতে বাধ্য হন।

দেশজুড়ে ক্যাবলে অগ্নিসংযোগ ও কেটে ফেলা হয়েছে দাবি করে পলক বলেন, সারাদেশে শত শত কিলোমিটার ফাইবার ক্যাবল; যেগুলো মাটির ওপরে ছিল সেগুলো সন্ত্রাসীরা পুড়িয়ে দিয়েছে, কেটে ফেলেছে। পাশাপাশি কক্সবাজার-চট্টগ্রাম হয়ে ঢাকায় আনা যে ফাইবার অপটিক্যাল ক্যাবল ছিল; সেগুলো সড়ক ও সেতু মেরামতের কারণে ওপর দিয়ে টানা হয়েছিল, সেগুলোও পুড়িয়ে দেওয়া হয়। ঘটনার দুদিন পর আমরা চিহ্নিত করতে পারি, কোথায় কোথায় এমন ক্যাবল বিচ্ছিন্নের ঘটনা ঘটেছে। সেটা সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে মেরামত করা হয়েছে।

কুয়াকাটার সাবমেরিন ক্যাবল সচল ছিল জানিয়ে তিনি বলেন, শুধু কুয়াকাটা সাবমেরিন ক্যাবল সচল ছিল। সেটা দিয়ে যত দ্রুত সম্ভব আমরা এয়ারপোর্ট, কূটনৈতিকপাড়া, বাণিজ্যিক এলাকা, গণমাধ্যম, হাসপাতাল, ব্যাংকসহ অতি গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় ইন্টারনেট দিয়েছি। তবে হ্যাঁ, তার মধ্যেও তিনদিন বিশ্বের সঙ্গে আমাদের ইন্টারনেট সংযোগ পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন ছিল।

এর আগে সকাল ৯টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক দেশের চারটি মোবাইল অপারেটর কোম্পানি, চারটি মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস (এমএফএস), অ্যাসোসিয়েশন অব মোবাইল টেলিফোন অপারেটর বাংলাদেশের (অ্যামটব) কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন।

বৈঠকে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইসিটি বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন ও বিটিআরসি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মহিউদ্দিন আহমেদসহ নিয়ন্ত্রক সংস্থার কর্মকর্তারা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধশুরুতে জামায়াত-শিবির ঘাপটি মেরে পরে ভয়ংকরভাবে সামনে আসে: প্রধানমন্ত্রী
পরবর্তী নিবন্ধনিহত ৩৪ জনের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দিলেন প্রধানমন্ত্রী