নিউজ ডেস্ক :
অন্তর্বর্তী সরকার এবার মাঠ প্রশাসনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে পরিবর্তন আনছে।
প্রাথমিকভাবে ৬৪ জেলা প্রশাসকের মধ্যে প্রায় অর্ধেক পদে পরিবর্তন আসতে পারে বলে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে জানা গেছে।
ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের দমন-পীড়ন ও ক্ষমতা ধরে রাখার সহযোগী ছিলেন বেশিরভাগ জেলা প্রশাসক। অনেক ডিসির বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ থাকলেও আওয়ামী লীগের আস্থাভাজন হিসেবে তাদের মাঠ প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে বসানো হয়। এসব কর্মকর্তার অনেকেরই ছাত্রজীবনে আওয়ামী লীগের ছাত্র সংগঠন ছাত্রলীগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা ছিল।
গত রোববার ঝিনাইদহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের আন্দোলনের মুখে ছুটি নিয়ে কার্যালয় ত্যাগ করেছেন জেলা প্রশাসক এস এম রফিকুল ইসলাম। বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকা অনেক জেলা প্রশাসকই এমন অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে রয়েছেন বলে জানা গেছে।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে জানা গেছে, প্রশাসনে বঞ্চিত ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের উপসচিবদের ডিসি পদে নিয়োগের জন্য ফিট লিস্ট করা হয়েছে। এরই মধ্যে সাক্ষাৎকারও নেওয়া হয়েছে। দু-একদিনের মধ্যেই পুরোনোদের প্রত্যাহার করে ডিসি পদে নতুন কর্মকর্তাদের পদায়ন হবে বলে জানা গেছে।
দেশের ৬৪ জেলায় ডিসি পদে বর্তমানে ২৪, ২৫ ও ২৭ ব্যাচের কর্মকর্তারা মাঠ প্রশাসনে দায়িত্ব পালন করছেন। এখন এই তিন ব্যাচের বাদ পড়াদের ডিসি করা হচ্ছে।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ‘মার্চ টু ঢাকা’ কর্মসূচির দিনে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। ওইদিনই বিলুপ্ত হয় মন্ত্রিসভা। পরদিন ৬ আগস্ট দ্বাদশ জাতীয় সংসদ ভেঙে দেন রাষ্ট্রপতি।
এরপর গত ৮ আগস্ট শপথ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। এ সরকারের প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব নেন শান্তিতে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এছাড়া রয়েছেন ২০ জন উপদেষ্টা।
অন্তর্বর্তী সরকার এরই মধ্যে প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পাওয়া কর্মকর্তাদের চুক্তি বাতিল করেছে। গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা আওয়ামী লীগ সরকারের আস্থাভাজনদেরও সরানো হচ্ছে। এখন মাঠ প্রশাসনে রদবদল আনা হচ্ছে।
সরকারের উপসচিব পদ মর্যাদার কর্মকর্তাদের জেলা প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়। জেলা পর্যায়ে ডিসি কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিনিধিত্ব করেন।
ডিসি জেলার সাধারণ প্রশাসনিক কার্যক্রম, জেলা ম্যাজিস্ট্রেট হিসেবে জেলার আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং কালেক্টর হিসেবে ভূমি ব্যবস্থাপনার বিষয়গুলো দেখে থাকেন। এছাড়া নির্বাচিত সরকারের বিশেষ কর্মসূচি এবং চলমান সব উন্নয়নমূলক কাজে জেলা প্রশাসক তদারকি করে থাকেন।