ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা চায় বিএসইসি

নিউজ ডেস্ক:
দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগের জটিলতা নিরসনে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে নির্দেশনা চেয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

গত ৪ সেপ্টেম্বর বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. আনোয়ারুল ইসলাম সাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।

বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, স্টক এক্সচেঞ্জের নমিনেশন অ্যান্ড রেমুনারেশন কমিটি (এনআরসি) কর্তৃক প্রস্তাব দাখিলের প্রেক্ষিতে কমিশন স্টক এক্সচেঞ্জ এর স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগে অনুমোদন প্রদান করে থাকে। তবে ডিএসইর স্বতন্ত্র পরিচালক পদত্যাগ করায় বর্তমানে উক্ত এক্সচেঞ্জ এর এনআরসি কমিটি নাই। যা না থাকায়, স্বতন্ত্র পরিচালক নির্বাচন বিষয়ে ডিএসই হতে প্রস্তাব কমিশনে দাখিলের সুযোগ নাই। এছাড়া প্রয়োজনীয় সংখ্যক পরিচালক না থাকায়, এনআরসি কমিটি গঠনেরও সুযোগ নেই। সে প্রেক্ষিতে বর্তমানে স্বতন্ত্র পরিচালক না থাকায় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ আইন অনুযায়ী পূর্ণকার্যকর নয়।

তবে শেয়ারবাজারের সার্বিক উন্নয়ন ও বিনিয়োগকারীর স্বার্থ রক্ষার্থে স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ করা আবশ্যক ও অতীব জরুরি বলে চিঠিতে উল্লেখ করেছে বিএসইসি। সে কারণে গত ১ সেপ্টেম্বর ৯১৮তম জরুরি কমিশন সভার সিদ্ধান্তক্রমে এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩ এর ২৪ ধারা ও অন্যান্য সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী স্বতন্ত্র পরিচালক হিসাবে কে এএম মাজেদুর রহমানকে নিয়োগ প্রদান করা হয়।

চিঠিতে আরো উল্লেখ কা হয়, মাজেদুর রহমান পূর্বে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেকহোল্ডার একে খান সিকিউরিটিজ লিমিটেড এর পরিচালনা পর্ষদের একজন মনোনীত পরিচালক হিসাবে ২০২০ সালের ৭ ডিসেম্বর থেকে ২০২২ সালের ৪ অক্টোবর পর্যন্ত নিযুক্ত ছিলেন। বর্তমানে মাজেদুর রহমান ডিএসই বোর্ড অ্যান্ড অ্যাডমিনিস্ট্রেশন রেগুলেশনস ২০১৩ এর রেগুলেশনস ৫(৫)(এফ) ও ৫(৫)(জি) এ উল্লিখিত কোন প্রতিষ্ঠানের সাথে কোনভাবে জড়িত নন। তবে তিনি একে খান সিকিউরিটিজের পরিচালনা পর্ষদের একজন মনোনীত পরিচালক হিসাবে নিযুক্ত ছিলেন বিধায়, তার নিয়োগের জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে।

এমতাবস্থায় ডিএসইর পরিচালনা পর্ষদ গঠন ও শেয়ারবাজার সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য এক্সচেঞ্জেস ডিমিউচ্যুয়ালাইজেশন আইন, ২০১৩ এর ২৬ ধারা মোতাবেক উক্ত জটিলতা নিরসনে জরুরিভিত্তিতে সরকারের নির্দেশনা প্রয়োজন।

প্রসঙ্গত, গত ১ সেপ্টেম্বর) বিএসইসি চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ৯১৮তম কমিশন সভায় ডিএসইর সাতজন স্বতন্ত্র পরিচালক নিয়োগ দেওয়া হয়। স্বতন্ত্র পরিচালকরা হলেন- মালদ্বীপ ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান কে এ এম মাজেদুর রহমান, আর্মি ইনস্টিটিউট অফ বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের ডিরেক্টর জেনারেল- প্রফেসর মেজর জেনারেল (অব.) ডক্টর মো. কামরুজ্জামান, অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড. নাহিদ হোসেন, বাংলাদেশ আর্মির ৪৬ ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মফিজুল ইসলাম রাশেদ, সেন্টার অন ইনটিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট ফর এশিয়া অ্যান্ড প্যাসিফিকের (সিরডাপ) রিসার্চ ডাইরেক্টর ড. মো. হেলালউদ্দিন, মেটলাইফ বাংলাদেশের সাবেক জেনারেল ম্যানেজার সৈয়দ হাম্মাদুল করীম এবং বাংলাদেশ ডাটা সেন্টার ও ডিজাস্টার রিকভারি সাইট লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও, চিফ ইনফরমেশন সিকিউরিটি অফিসার (সিআইএসও) বাংলাদেশ ব্যাংক (লিয়েন) মো. ইসহাক মিয়া।

ডিএসইর এসব স্বতন্ত্র পরিচালকের মধ্যে এ এম মাজেদুর রহমান, ড. নাহিদ হোসেন ও ড. মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন এই তিনজনের নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে জটিলতা নিরসনের লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের নির্দেশনা চেয়েছে বিএসইসি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে মঈন আলী
পরবর্তী নিবন্ধছাত্রদের সঙ্গে মতবিনিময়ে প্রধান উপদেষ্টা