কাল থেকে সরকারি দামে ডিম বিক্রি করবে বড় কোম্পানিগুলো

নিউজ ডেস্ক :
ডিমের বাজারের চলমান অস্থিরতা কাটাতে আগামীকাল বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে সরকারি দামে ডিম বিক্রির বিশেষ কার্যক্রম। এরই অংশ হিসেবে রাজধানীতে ডিমের প্রধান দুটি পাইকারি বাজার তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারে প্রতিদিন ২০ লাখ ডিম সরবরাহ করবে এ শিল্পের বৃহৎ করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো।

বুধবার (১৬ অক্টোবর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে কার্যক্রমের প্রধান সমন্বয়ক বাংলাদেশ পোল্ট্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিল (বিপিআইসিসি)।

সেখানে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে ঢাকায় এ কার্যক্রম শুরু করা হলেও সারাদেশেই এর প্রভাব পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

বৃহস্পতিবার ভোর ৪টায় ‘জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর’ এর মহাপরিচালক মো. আলীম আখতার খান কাপ্তান বাজারে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। তেজগাঁও বাজারে এ কার্যক্রম শুরু হবে শুক্রবার থেকে।

এ বিষয়ে বিপিআইসিসির যুগ্ম-আহ্বায়ক মসিউর রহমান বলেন, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত দামে ডিম বিক্রি করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও পোল্ট্রি স্টেকহোল্ডাররা একত্রে বসে ডিমের যৌক্তিক উৎপাদন খরচসহ উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিমের মূল্য নির্ধারণ করেছে। সাম্প্রতিক সময়ের পাহাড়ি ঢল ও অতিবৃষ্টিজনিত বন্যার কারণে দেশের প্রায় এক-চতুর্থাংশ জেলার পোল্ট্রি খামার ক্ষতিগ্রস্ত হলে দৈনিক প্রায় ৬০-৭০ লাখ ডিমের উৎপাদন কমে যায়। এর ফলে চাহিদা ও জোগানের ভারসাম্যহীনতা সৃষ্টি হয়।

তিনি বলেন, দেশের এ সংকটকালীন সময়ে একটি মহল অতিরিক্ত মুনাফা লোটার চেষ্টা করলে ডিমের বাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। দেশ ও মানুষের বৃহত্তর স্বার্থে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে একাত্ম হয়ে পোল্ট্রি শিল্পের কেন্দ্রীয় সংগঠন বিপিআইসিসি আগামী ১৫ দিনের যে বিশেষ কার্যক্রম হাতে নিয়েছে তাতে খামার থেকে প্রতিটি ডিম ১০ টাকা ৫৮ পয়সা, পাইকারিতে ১১ টাকা ১ পয়সা এবং খুচরা পর্যায়ে ১২ টাকায় পাওয়া যাবে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়, কৃষি মন্ত্রণালয়, সরকারের বাজার তদারকি সংস্থা, ডিম উৎপাদনকারী বড় খামারি ও পাইকারি আড়তদারদের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠা এ উদ্যোগ সফল করবে বলে আশা করা হচ্ছে।

বিপিআইসিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, গত ১৫ অক্টোবর সকালে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে এবং দুপুরে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে পৃথক দুটি সভা হয়। ওইদিন সন্ধ্যায়ই বিপিআইসিসির উদ্যোগে ডিম উৎপাদনকারী বড় খামারিদের সঙ্গে যোগাযোগ করে একটি অনলাইন সভা আহ্বান করা হয়। পরদিন ১৬ অক্টোবর বড় খামারি এবং তেজগাঁও ও কাপ্তান বাজারের পাইকারি আড়তদারদের প্রতিনিধি সমন্বয়ে আরও একটি সভা হয়। যেখানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানী ঢাকায় ডিমের সরবরাহ ও বিপণন সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়।

পরবর্তীতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে রাজধানীর কাপ্তান বাজারে সরকারি দামে ডিম বিক্রির কার্যক্রম শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সময় স্বল্পতার কারণে তেজগাঁও পাইকারি বাজারে যথাসময়ে ডিমের চালান পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে না; তাই একদিন পর শুক্রবার থেকে তেজগাঁও বাজারের কার্যক্রম শুরু হবে।

এ কার্যক্রমে ডিম সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো হচ্ছে- কাজী ফার্মস, ডায়মন্ড এগস লি., প্যারাগন পোল্ট্রি, পিপলস পোল্ট্রি অ্যান্ড হ্যাচারি, নারিশ পোল্ট্রি, ভিআইপি শাহাদত পোল্ট্রি, নর্থ এগ লি., নাবিল অ্যাগ্রো, আর.আর.পি, রানা পোল্ট্রি, চাঁদ অ্যাগ্রো, কৃষিবিদ পোল্ট্রি, চিত্রা অ্যাগ্রো, আমান পোল্ট্রি এবং মেগা পোল্ট্রি। আফিল এগ্রো এবং প্রাণ অ্যাগ্রো পরবর্তীতে এ কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত হবে বলে আশা করছে বিপিআইসিসি।

পূর্ববর্তী নিবন্ধভুটানের সঙ্গে বাণিজ্য সহযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্ব আরোপ প্রধান উপদেষ্টার
পরবর্তী নিবন্ধপুঁজিবাজার দেশের অর্থনীতির কেন্দ্র হিসেবে কাজ করবে: বিএসইসি চেয়ারম্যান