নিউজ ডেস্ক :
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে শেয়ার বিক্রিতে অর্জিত মূলধনী মুনাফার ওপর করহার কমানোর পর দেশের শেয়ারবাজারে টানা ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা দিয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার পাশাপাশি লেনদেনের গতিও বাড়তে শুরু করেছে।
আগের কার্যদিবসের ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেনে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বেড়েছে। একই সঙ্গে মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ১০০ পয়েন্টের ওপরে বেড়েছে। পাশাপাশি লেনদেন বেড়ে ৮০০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে।
অপর শেয়ারবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) দাম বাড়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। এতে এ বাজারটিতেও মূল্যসূচকের বড় উত্থান হয়েছে। সিএসইর প্রধান মূল্যসূচক বেড়েছে প্রায় ৩০০ পয়েন্ট। তবে এ বাজারটিতে লেনদেনের পরিমাণ কমেছে।
এর আগে শেয়ারবাজারে দরপতন দেখা দিলে গতকাল সোমবার দুপুরে মূলধনী মুনাফার ওপর করহার কমিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের এ উদ্যোগের খবর দ্রুতই শেয়ারবাজারে ছড়িয়ে পড়ে। যার প্রভাবে দরপতন থেকে বেরিয়ে সোমবারই ঊর্ধ্বমুখী ধারায় ফেরে শেয়ারবাজার।
এ পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু হয় বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম বাড়ার মাধ্যমে। ফলে লেনদেনের শুরুতেই সূচকের বড় উত্থান হয়। লেনদেনের শুরুতে দেখা দেওয়া ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকে লেনদেনের শেষ পর্যন্ত। এমনকি লেনদেনের সময় যত গড়ায় সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা ততো বাড়ে।
দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে ৩০৪টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের স্থান হয়েছে দাম বাড়ার তালিকায়। বিপরীতে দাম কমেছে ৬৫টি প্রতিষ্ঠানের। আর ৩০টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
এতে ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স আগের দিনের তুলনায় ১১২ পয়েন্ট বেড়ে ৫ হাজার ৩৬৫ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ৩০ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ৯৬৭ পয়েন্টে অবস্থান করছে। আর ডিএসই শরিয়াহ্ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৯ পয়েন্ট বেড়ে ১ হাজার ১৯১ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।
সবকটি মূল্যসূচক বাড়ার পাশাপাশি ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণও বেড়েছে। দিনভর বাজারটিতে লেনদেন হয়েছে ৮৩৯ কোটি ৭০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ৫৬৫ কোটি ২৪ লাখ টাকা। সে হিসাবে আগের কার্যদিবসের তুলনায় লেনদেন বেড়েছে ২৭৪ কোটি ৪৬ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে গত ২ সেপ্টেম্বরের পর ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হলো।
এই লেনদেন বাড়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালসের শেয়ার। টাকার অঙ্কে কোম্পানিটির ৩৩ কোটি ২২ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। দ্বিতীয় স্থানে থাকা একমি ল্যাবরেটরিজের ৩১ কোটি ৮৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২১ কোটি ৯৭ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে লিন্ডে বাংলাদেশ।
এছাড়া ডিএসইতে লেনদেনের দিক থেকে শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় রয়েছে- বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন, ইসলামী ব্যাংক, ব্র্যাক ব্যাংক, ওরিয়ন ফার্মা, মিডল্যান্ড ব্যাংক, এশিয়াটিক ল্যাবরেটরিজ এবং লাভেলো আইসক্রিম।