খেলাপি ঋণ ১০ শতাংশের বেশি থাকা ব্যাংক লভ্যাংশ দিতে পারবে না

নিউজ ডেস্ক:
শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশ নীতিমালায় কড়াকড়ি আরোপ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। নতুন নীতিমালায়, যেসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণের পরিমাণ ১০ শতাংশের বেশি তারা চলতি বছরে লভ্যাংশ দিতে পারবে না। ব্যাংকখাতের মূলধন কাঠামোকে শক্তিশালী করতে নতুন এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) বাংলাদেশ ব্যাংকের অব অফ-সাইট সুপারভিশন বিভাগ শেয়ারের বিপরীতে লভ্যাংশের নীতিমালা জারি করে। যা পরিপালনে সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠানো হয়েছে। ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে ব্যাংকিংখাতে খেলাপি ঋণের হার ২০ শতাংশেরও বেশি।

নির্দেশনা মতে, বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, শুধু পঞ্জিকাবষের্র মুনাফা থেকে নগদ লভ্যাংশ প্রদান করা যাবে, পূর্বের পুঞ্জীভূত মুনাফা থেকে কোনো নগদ লভ্যাংশ বিতরণ করা যাবে না। নগদ জমার হার (সিআরআর) ও সংবিধিবদ্ধ তারল্য অনুপাত (এসএলআর) ঘাটতির কারণে দণ্ড সুদ ও জরিমানা অনাদায়ী থাকলে এমন ব্যাংকগুলোও লভ্যাংশ দিতে পারবে না। ঋণ, বিনিয়োগ ও অন্যান্য সম্পদের বিপরীতে ব্যাংকের কোনো প্রকার প্রভিশন ঘাটতি থাকা যাবে না। প্রভিশন সংরক্ষণ ও অন্যান্য ব্যয় মেটানোর জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে কোনো প্রকার ডেফারেল সুবিধা গ্রহণ করলে সেসব ব্যাংক লভ্যাংশ দিতে পারবে না।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর পর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২.৫ শতাংশ ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১৫ শতাংশ মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে, সে সব ব্যাংক তাদের সামর্থ্য অনুসারে নগদ ও স্টক লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারবে। সে ক্ষেত্রে, তাদের ডিভিডেন্ড পেআউট রেশিও সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশের অধিক হবে না এবং লভ্যাংশ বিতরণ পরবর্তী মূলধন পর্যাপ্ততার হার (ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে সংরক্ষিত মূলধনের হার) কোনোভাবেই ১৩.৫ শতাংশের নিচে নামতে পারবে না।

যেসব ব্যাংক প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর পর ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে ২.৫ শতাংশ ক্যাপিটাল কনজারভেশন বাফারসহ ন্যূনতম ১২.৫ শতাংশের বেশি কিন্তু ১৫ শতাংশের কম মূলধন সংরক্ষণ করতে সক্ষম হবে, সে সব ব্যাংক তাদের সামর্থ্য অনুসারে নগদ ও স্টক লভ্যাংশ বিতরণ করতে পারবে। সেক্ষেত্রে, তাদের ডিভিডেন্ড পেআউট রেশিও সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশের বেশি হবে না এবং লভ্যাংশ বিতরণ পরবর্তী মূলধন পর্যাপ্ততার হার (ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে সংরক্ষিত মূলধনের হার) কোনোভাবেই ১২.৫ শতাংশের নিচে নামতে পারবে না।

প্রভিশন সংরক্ষণসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানোর পর যে সব ব্যাংকের ঝুঁকিভিত্তিক সম্পদের বিপরীতে সংরক্ষিত মূলধনের হার ১২.৫ শতাংশের কম তবে ন্যূনতম রক্ষিত মূলধন (১০ শতাংশ) এর বেশি হবে সে সব ব্যাংক, তাদের সামর্থ্য অনুসারে কেবলমাত্র স্টক লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারবে। এ নীতিমালা অনুসারে লভ্যাংশ প্রদানকারী ব্যাংকসমূহকে লভ্যাংশ ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে ব্যবস্থাপনা পরিচালক/সিইও এর স্বাক্ষরে বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন (ডিভিশন-২) এ একটি প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এ নীতিমালাটি ২০২৫ এর সমাপ্ত বছরের লভ্যাংশ ঘোষণার ক্ষেত্র হতে ব্যাংকসমূহের জন্য প্রযোজ্য হবে।

পূর্ববর্তী নিবন্ধনতুন চারটি বিভাগ খুললো বাংলাদেশ ব্যাংক
পরবর্তী নিবন্ধবাজারে এখন অস্বস্তি শুধু চালের দামে