সাত বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আধুনিকীকরণের ব্যয় বাড়লো

নিউজ ডেস্ক;

সাতটি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেডিওলজি ও ইমেজিং ব্যবস্থায় আধুনিকীকরণের পূর্ত কাজের ব্যয় ৫৪ কোটি ৭৮ লাখ ৯১ হাজার ১৫৩ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। সেইসঙ্গে ‘ইনক্লুসিভ সার্ভিসেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস ফর হোস্ট অ্যান্ড এফডিএমএন কমিউনিটি’ প্রকল্পের তিনটি প্যাকেজের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

বুধবার (৭ মে) সচিবালয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন-কক্ষে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদ কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠকে ভার্চুয়ালি অংশ নিয়ে সভাপতিত্ব করেন অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমদ।

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে জাইকার ওডিএ গাইড লাইনের আলোকে স্বাক্ষরিত পূর্ত কাজের চুক্তিপত্রের পিসিসি ১৩ দশমিক ৮ সংশোধনের মাধ্যমে চুক্তিমূল্য সমন্বয় করে সংশোধিত ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের পরিপ্রেক্ষিতে জাইকার ওডিএ ঋণের চুক্তির কম্পোনেন্ট-২ এর আওতায় ‘সাতটি বিভাগীয় মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেডিওলজি ও ইমেজিং ব্যবস্থায় আধুনিকীকরণের পূর্ত কাজ যৌথভাবে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড এবং চায়না গেজহুবা গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ৪০১ কোটি ৭৮ লাখ ৬৮ হাজার ৪৫৮ টাকায় ক্রয়ের চুক্তি করা হয়।

চুক্তি অনুসারে কাজ চলমান অবস্থায় পরিবর্তিত রেট শিডিউল অনুযায়ী মূল্য সমন্বয় প্রয়োজন হওয়ায় অতিরিক্ত ৫৪ কোটি ৭৮ লাখ ৯১ হাজার ১৫৩ টাকা চুক্তিমূল্য সমন্বয়ের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হলে তাতে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি।

মূল্য সমন্বয়ের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে- ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের ফলে পণ্যমূল্য বৃদ্ধি, গণপূর্ত অধিদপ্তরের নতুন রেট শিডিউল অনুযায়ী বিভিন্ন আইটেমের একক মূল্য বৃদ্ধি, অর্থ বিভাগ কর্তৃক ২৩টি ক্যাটাগরির বিভিন্ন আইটেমের দর পুনর্নির্ধারণ, বরাদ্দ করা জায়গায় বিভিন্ন স্থাপনা ও গাছ থাকার কারণে তা অপসারণ করে চুক্তিপত্রের ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান ১৮০ দিনের মধ্যে স্থান বুঝিয়ে দেওয়া সম্ভব হয়নি এবং কোভিড-১৯ মহামারির কারণে প্রকল্পে বিদেশি কনসালটেন্টরা দেশে বাইরে অবস্থান করার কারণে দরপত্র মূল্যায়ন করে কার্যাদেশ দিতে বিলম্ব হয়।

এদিকে, বৈঠকে ‘ইনক্লুসিভ সার্ভিসেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস ফর হোস্ট অ্যান্ড এফডিএমএন কমিউনিটি’ প্রকল্পের প্যাকেজ নং-এসডি-০৯ এর আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ কমিটি। প্রকল্পের পরামর্শক সেবা ক্রয়ের জন্য একক উৎসভিত্তিক পদ্ধতিতে ইউনিসেফকে কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ করা হলে সংস্থাটি প্রস্তাব দাখিল করে। প্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে পিইসির নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশ করা দরদাতা প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ৫৬ লাখ ৫০ হাজার ৮১০ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৬৬ কোটি ১১ লাখ ৪৪ হাজার ৭৭০ টাকা।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ হবে
কক্সবাজারের দুটি দুর্গম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (মহেশখালী ও কুতুবদিয়া) এবং নোয়াখালীর একটি দুর্গম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (হাতিয়া) এবং চট্টগ্রামের একটি দুর্গম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স (সন্দ্বীপ)-এ অতিরিক্ত জনবল সংস্থানের মাধ্যম হোস্ট কমিউনিটির স্বাস্থ্য সেবার মানোন্নয়ন।

বৈঠকে আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘ইনক্লুসিভ সার্ভিসেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস ফর হোস্ট অ্যান্ড এফডিএমএন কমিউনিটিস’ প্রকল্পের প্যাকেজ নং-এসডি-১০ এর আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের ক্রয় প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের পরামর্শক সেবা ক্রয়ের জন্য একক উৎস ভিত্তিক পদ্ধতিতে ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন ফর মাইগ্রেশনকে (আইওএম) কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ করা হলে সংস্থাটি প্রস্তাব দাখিল করে।

প্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে পিইসির নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশ করা দরদাতা প্রতিষ্ঠান আইওএমকে ৩০ লাখ ডলারে পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ৩৫ কোটি ১০ লাখ টাকা।

পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের কাজ হবে
চট্টগ্রাম বিভাগে বসবাসকারী জনগণের জরুরি স্বাস্থ্যসেবা দিতে যোগ্য চিকিৎসক ও সহায়তা কর্মী সংস্থানের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা।

বৈঠকে স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আর এক প্রস্তাবের পরিপ্রেক্ষিতে ‘ইনক্লুসিভ সার্ভিসেস অ্যান্ড অপরচুনিটিস ফর হোস্ট অ্যান্ড এফডিএমএন কমিউনিটিস’ প্রকল্পের প্যাকেজ নং-এসডি-১৩ এর আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান নিয়োগের আর একটি ক্রয় প্রস্তাবেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

পরামর্শক সেবা ক্রয়ের জন্য একক উৎসভিত্তিক পদ্ধতিতে ইউনিসেফকে কারিগরি ও আর্থিক প্রস্তাব দাখিলের অনুরোধ করা হলে প্রস্তাব দাখিল করে। প্রস্তাবের সব প্রক্রিয়া শেষে পিইসির নেগোসিয়েশনের মাধ্যমে সুপারিশ করা দরদাতা প্রতিষ্ঠান ইউনিসেফ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। এতে ব্যয় হবে ১ কোটি ৭ লাখ ২৮ হাজার ৫২১ ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ১২৫ কোটি ৫২ লাখ ৩২ হাজার ৯৫৭ টাকা।

বলপ্রয়োগ বাস্তুচ্যুত মিয়ানমার নাগরিকদের প্রয়োজনীয় প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবার পরিধি বিস্তৃত ও উন্নয়ন করা।

পূর্ববর্তী নিবন্ধআকুর দায় পরিশোধে কিছুটা কমলো রিজার্ভ
পরবর্তী নিবন্ধসিঙ্গাপুর থেকে আসবে দুই কার্গো এলএনজি, ব্যয় ১১০৪ কোটি টাকা