কুষ্টিয়া প্রতিনিধি : কুষ্টিয়ায় স্কুলশিক্ষিকা রোকসানা খানম হত্যার ঘটনায় তার ভাইয়ের ছেলে নওরোজ কবির নিশাতকে গ্রেপ্তার করেছে ডিবি পুলিশ।পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেছেন।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে নিশাত জানান, অনলাইন বেটিং জুয়ায় বাধা দেওয়ায় তিনি রোকসানাকে ঘুমের মধ্যে শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেছেন। হত্যায় ব্যবহৃত শিলটি তার দেখিয়ে দেওয়া লিফটের পরিত্যক্ত ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিবি পুলিশের ওসি নাসির উদ্দিন বলেন, সোমবার (৭ নভেম্বর) রাত ১২টার দিকে শিল উদ্ধারের পর নিশাতকে হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে। মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) সকালে নিশাতকে আদালতে পাঠানো হবে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ওসি (তদন্ত) জহুরুল ইসলাম জানান, নিহতের স্বামী খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বাদী হয়ে একটি মামলা করেছেন। সোমবার (৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার নিজ বাসভবন থেকে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের শিক্ষিকা রোকসানার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
পুলিশ জানায়, শহরের হাউজিং স্টেটের ডি ব্লকের ২৮৫ নম্বর প্লটের ছয় তলা ভবনের দোতলায় থাকতেন তিনি। তার স্বামী খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান যশোরে এলজিইডিতে চাকরি করেন। তিনি সেখানেই থাকেন। এই দম্পতির কোনো সন্তান নেই। রোকসানা নিজ বাড়ির দোতলায় একা থাকতেন। একই বাড়ির চার তলায় থাকেন তার ভাইয়ের স্ত্রী ও সন্তানরা।
ডিবি পুলিশের ওসি নাসির উদ্দিন জানান, রোকসানা হত্যার ঘটনায় পরিবারের তিন জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এর মধ্যে ভাইয়ের ছোট ছেলে নিশাতের মোবাইল পরীক্ষা করে সন্দেহ প্রবল হয়। নিশাতের বাবা মারা যাওয়ার পর তাকে তার ফুফু রোকসানাই প্রতিপালন করেছেন। তার বয়স এখন ১৯ বছর।
ওসি নাসির জানান, নিশাতের অনলাইন বেটিং জুয়ায় আসক্তি আছে। এ কারণে তিনি ফুফুর কাছ থেকে প্রায়ই টাকা নিতেন। ফুফু তাকে একটি মোটরসাইকেল কিনে দিয়েছিলেন, সেটাও বিক্রি করে জুয়া খেলেছেন।
নিশাতের বরাত দিয়ে ওসি জানান, জুয়া নিয়ে বকাবকি করায় নিশাত তার ফুফুকে হত্যার সিদ্ধান্ত নেন। রোববার সন্ধ্যায় রোকসানা বাড়ির ছাদে উঠলে, সেই সুযোগে একটি রুমে ঢুকে আত্মগোপন করেন নিশাত। ফুফু ঘুমিয়ে পড়লে রাত দেড়টার দিকে শিল দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করেন।
নিশাত পুলিশকে আরও জানান, হত্যার পর তিনি রোকসানার মোবাইল ফোন থেকে নিজের মোবাইলে কয়েকটি মেসেজ পাঠান। সেখানে সকালে বাসস্ট্যান্ডে পৌঁছে দেওয়ার কথা উল্লেখ ছিলো। এগুলো পুলিশকে দেখিয়ে তিনি প্রথমে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন।
ওসি নাসির জানান, জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে নিশাত হত্যার কথা স্বীকার করেন। হত্যার পর তিনি বাসার বারান্দার ওপরের ডিজাইন করা গোল ছিদ্র দিয়ে বের হন।