নিউজ ডেস্ক : বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্যে বিনিময় মাধ্যম হিসেবে ডলারের পরিবর্তে রুপির ব্যবহারের প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে আরও আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
মঙ্গলবার (২৭ ডিসেম্বর) দুপুরে সচিবালয়ে সম্প্রতি ভারত সফর শেষে দেশে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
গত ২২-২৩ ডিসেম্বর ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লীতে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যমন্ত্রী পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশের বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এবং ভারতের বাণিজ্যমন্ত্রী পিয়ুশ গয়ালের নেতৃত্বে দু’দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে অনুষ্ঠিত সভায় দ্বি-পাক্ষিক বাণিজ্য ও পারস্পরিক সহযোগিতার বিভিন্ন বিষয় আলোচনা হয়।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কারেন্সির বিষয়ে কথা হয়েছে, দু’দেশের বাণিজ্যে বিনিময় মাধ্যম হিসেবে ডলারের পরিবর্তে ভারতীয় রুপি ব্যবহারের। এ বিষয়ে আমরা নিশ্চিত কিছু বলতে পারিনি, কারণ এক্ষেত্রে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সংশ্লিষ্টদের পরামর্শ লাগবে। আমরা বলেছি আলোচনা হতে পারে। তারা রাশিয়া এবং ইরানের সঙ্গে এটি শুরু করেছে। এটা পারব কিনা সেই হিসাবের ব্যাপারও আছে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ এবং রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে সৃষ্ট সম্ভাব্য খাদ্য সংকট প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে চাল, গম, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও ডালের মতো নিত্যপ্রয়োজনী খাদ্যপণ্যের প্রধান সরবরাহকারী দেশ ভারতের কাছে এ সব পণ্য আমদানিতে বার্ষিক কোটা সুবিধা প্রদানে অনুরোধ জানিয়েছি। যাতে আমাদের সমস্যা না হয়। যেমন ভারত পেঁয়াজ ও গম রপ্তানি বন্ধ করায় মধ্যে আমাদের সমস্যা হয়েছিলো। তারা বলছে আমরা যা চেয়েছি তা তারা দিতে পারবে।
তিনি বলেন, আমরা যদি সেটা না নেই তাহলে কি হবে। সেজন্য বলেছে সবাই বসে যা প্রয়োজনীয় তা তারা দেবে। তারা যেন আমাদের পণ্যগুলো হঠাৎ করে বন্ধ করে না দেয়। আরেকটি কথা বলেছি পেয়াঁজ নিয়ে সমস্যা হয়েছিলো, সেক্ষেত্রে আমাদের যাতে একমাস সময় দেওয়া হয়। আমাদের আগে থেকে সতর্ক করার জন্য বলেছি। তাছাড়া, বাংলাদেশের অন্যতম রপ্তানি পণ্য পাটজাত সামগ্রীর উপর ২০১৭ সাল হতে আরোপিত অ্যান্টি-ডাম্পিং ডিউটি আর বহাল না রাখার জন্য ভারতকে অনুরোধ করা হয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, পণ্য আমদানিতে যে কোটার কথা বলেছি সেখানে পরিমাণ উল্লেখ করেছিলাম। তারা বলেছে পরিমাণ তো আমরা (বাংলাদেশ) আন্দাজ করে বলেছি, সেক্ষেত্রে সঠিক কতো পরিমাণ পণ্য প্রয়োজন হবে সেটি নির্ধারন করতে বলেছে। আমরা একটু বেশি করেই চেয়েছিলাম। তারা বলেছে অতীতের ৭-৮ বছরের রেকর্ড বলে না তোমাদের (বাংলাদেশ) এতো দরকার। বাংলাদেশের জন্য রাখার পর যদি না নেয় তাহলে সেগুলো নষ্ট হবে। সেজন্য দুইপক্ষ আলোচনা করে ঠিক করতে বলেছে।
বর্ডার হাট নিয়েও আলোচনা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ভারতের সঙ্গে বর্তমানে আমাদের ৭টি বর্ডার হাট চালু রয়েছে। ৩টি বর্ডার হাট প্রস্তুত রয়েছে। করনোর কারণে দীর্ঘদিন বর্ডার হাটগুলো বন্ধ ছিলো। এ বিষয়ে তাদের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা বলেছে দ্রুত বর্ডার হাট চালু হবে। এছাড়া এক দেড় মাসের মধ্যে আরও একটি বর্ডার হাট চালু করতে পারবো বলে আশা করছি।
টিপু মুনশি বলেন, ব্যবসায়ীদের একটি দাবি ছিলো দীর্ঘ মেয়াদী ভিসা, সেটি নিয়ে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী একটি বিষয়ে উৎসাহ দিয়েছিলেন ভারত হতে উচ্চফলনশীল রাবার ক্লোন আমদানি করার বিষয়ে। কারণ আমাদের দেশের রাবার খুব বেশি ভালো হয় না।
ব্যবসায়ীদের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী ভিসা প্রদানে ভারতের আপত্তি নেই জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, তারা বলেছে এক থেকে দেড়মাস একটু অপেক্ষা করতে হবে। করোনার পর মেডিকেল ভিসার জন্য প্রচুর চাপ পড়েছে। সেটা দিতেই তাদের সমস্যা হচ্ছে। তারা বলছে জানুয়ারির শেষ দিকে তাদের প্রেসার কমে আসবে। তখন তারা রেগুলার ভিসা, ট্যুরিস্ট ভিসা, মাল্টিপল ভিসা, ব্যবসায়ীদের ভিসার ব্যবস্থা করবে।