নিজস্ব প্রতিবেদক : শুধু আইএমএফের শর্তের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে দেশের অর্থনীতিকে সামনের দিকে এগিয়ে নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দিতে হবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ চেম্বার অব ইন্ডাস্ট্রির (বিসিআই) সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ। শনিবার (৩ জুন) বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এ কথা বলেন তিনি।
বিসিআই সভাপতি বলেন, শুধু আইএমএফের শর্তের দিকে গুরুত্ব না দিয়ে দেশের অর্থনীতি কীভাবে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে সেদিকে গুরুত্বারোপ করতে হবে। আমাদের এখন স্থানীয় শিল্প, আমদানি বিকল্প শিল্পের সক্ষমতা ফিরিয়ে আনা এবং টেকসই করা ও কর্মসংস্থান ধরে রাখার দিকে অধিক গুরুত্ব দিতে হবে।
ন্যূনতম আয়করের সিদ্ধান্ত স্বল্প আয়ের মানুষের ওপর বোঝা তৈরি করবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, উচ্চমূল্যস্ফীতির এসময়ে করযোগ্য নয় এমন টিনধারীদের ওপর ন্যূনতম দুই হাজার টাকা আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর ওপর করের বোঝা তৈরি করবে।
বিসিআই সভাপতি বলেন, প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা সাড়ে তিন লাখ করা হয়েছে, যা বিসিআই স্বাগত জানায়। তবে উচ্চমূল্যস্ফীতি ও জীবনযাত্রার ব্যয় বিবেচনায় আগামী কর বছরে ব্যক্তি শ্রেণির করমুক্ত আয়ের সীমা পাঁচ লাখ টাকা করার প্রস্তাব করছি। এছাড়া উচ্চমূল্যস্ফীতির এসময়ে করযোগ্য নয় এমন টিনধারীদের ওপর ন্যূনতম দুই হাজার টাকা আয়কর আরোপের সিদ্ধান্ত স্বল্প আয়ের জনগোষ্ঠীর ওপর করের বোঝা তৈরি করবে। তাই এ প্রস্তাব প্রত্যাহারের আহ্বান জানাচ্ছি।
বিদ্যমান ডলার সংকট এবং আমদানিতে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করায় রাজস্ব আদায় নতুন অর্থবছরের জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে বলে জানান তিনি।
আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, সরকারের আয় মূলত বেসরকারি খাত ও রাজস্ব বোর্ডের মাধ্যমে হয়। তাই বিসিআই মনে করে, বেসরকারি খাতে জ্বালানি স্বল্পতা, বিদ্যুৎ-গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি এবং নিরবচ্ছিন্ন সাপ্লাই না থাকার কারণে শিল্প কারখানাগুলো ৫০-৬০ শতাংশের বেশি উৎপাদন ক্ষমতা ধরে রাখতে পারছে না। সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের কন্ট্রাকশন পলিসির কারণে গত ১০ মাসে শিল্পগুলো মূলধনি যন্ত্রপাতি ৫৬ শতাংশ, মধ্যবর্তী কাঁচামাল ৩১.৩ শতাংশ এবং কাঁচামাল ৩১.৫ শতাংশ কম ঋণপত্র খুলেছে।
তিনি আরও বলেন, এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশনা থাকা দরকার যেন কোনো অবস্থাতেই শিল্পের কাঁচামাল, মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানি বাধাগ্রস্ত না হয়। এছাড়া সরকারকে কমমূল্যে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে। তা না হলে দেশীয় শিল্প তাদের সক্ষমতা ধরে রাখতে পারবে না, উৎপাদন খরচ বেড়ে যাবে। এতে করে মূল্যস্ফীতি কমবে না, বরং বেকারত্বের হার বেড়ে যাবে। ফলে কর আহরণে বাধাগ্রস্ত হবে এনবিআর।
বাজেট প্রতিক্রিয়ায় বিসিআই বলছে, রাজস্ব বোর্ডের প্রাকটিসেরও পরিবর্তন আনা দরকার। সেক্টরভিত্তিক থামরুলে গ্রোস প্রফিট (জিপি) ধরে শুল্কায়ন না করে কোম্পানি বিশেষে একচুয়াল একাউন্টিং প্র্যাকটিসের ভিত্তিতে শুল্কায়ন করা উচিত। যেমন- একচুয়াল প্রফিট অথবা একচুয়াল লস মেনে কোম্পানি ওয়াইজ হিসেবে শুল্কায়ন করলে যেসব কোম্পানি যারা কর দিচ্ছে না তারা কর দিতে আগ্রহী হবে।