নিউজ ডেস্ক : রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ব্যাংক ঋণ পরিশোধে ব্যবসায়ীদের আবারও বড় ছাড় দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত) মেয়াদি ঋণের কিস্তির অর্ধেক টাকা (৫০ শতাংশ) জুনের মধ্যে পরিশোধ করলে খেলাপি হবে না বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
মঙ্গলবার (২০ জুন) বাংলাদেশ ব্যাংকের ব্যাংকিং প্রবিধি ও নীতি বিভাগ ‘ঋণ শ্রেণিকরণ’ সংক্রান্ত নির্দেশনা দিয়ে একটি সার্কুলার জারি করেছে। সার্কুলারটি সব তফসিলি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।
সার্কুলারে বলা হয়, সাম্প্রতিক সময়ে বহির্বিশ্বে যুদ্ধাবস্থা প্রলম্বিত হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচামালসহ বিভিন্ন উপকরণের মূল্য ও আমদানি ব্যয় বেড়েছে। ফলে ঋণগ্রহীতারা তাদের ঋণের বিপরীতে প্রদেয় কিস্তির সম্পূর্ণ অংশ পরিশোধে অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন।
এমন পরিস্থিতিতে উৎপাদন ও সেবা খাতসহ সব ধরনের ব্যবসা চলমান রাখা ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে গতিশীলতা বজায় রাখতে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নির্দেশনা অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ এপ্রিল বিদ্যমান অশ্রেণিকৃত (খেলাপি নয় এমন) মেয়াদি ঋণের (স্বল্পমেয়াদি কৃষি ও ক্ষুদ্র ঋণসহ) বিপরীতে ২০১৩ সালের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত প্রদেয় কিস্তির ন্যূনতম ৫০ শতাংশ জুনের শেষ কর্মদিবসের মধ্যে পরিশোধ করা হলে উক্ত ঋণগুলো ত্রৈমাসিকে ভিত্তিতে খেলাপি করা যাবে না।
এ সময়ে কিস্তির যেসব টাকা বকেয়া থাকবে, তা ঋণের মেয়াদ শেষ হওয়ার পরবর্তী তিন মাসের মধ্যে সমকিস্তিতে অথবা এক কিস্তিতে পরিশোধ করতে হবে। নির্দেশনা মোতাবেক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থ হলে ঋণগুলো যথানিয়মে শ্রেণিকরণের আওতাভুক্ত হবে।
এই সুবিধায় ঋণের কিস্তি পরিশোধের ক্ষেত্রে সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণের ওপর চলতি বছরের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুন পর্যন্ত কোনোরূপ দণ্ড সুদ বা অতিরিক্ত ফি (যে নামেই অভিহিত করা হোক না কেন) আরোপ করা যাবে না।
পুনঃতফসিলের মাধ্যমে অশ্রেণিকৃত হিসেবে প্রদর্শিত ঋণের জন্যও এ সার্কুলারের আওতায় প্রদত্ত সুবিধা প্রযোজ্য হবে। ইসলামী শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলো তাদের প্রদত্ত বিনিয়োগের ক্ষেত্রে উপরোক্ত নীতিমালা অনুসরণ করে বর্ণিত সুবিধা প্রদান করতে পারবে।
এ সার্কুলারের আওতায় সুবিধাপ্রাপ্ত ঋণ বা বিনিয়োগের বিপরীতে যে পরিমাণ আরোপিত সুদ বা মুনাফা নগদে আদায় হবে তা আয়খাতে স্থানান্তর করা যাবে।
গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যবসায়ীদের ঋণ পরিশোধে ৫০ শতাংশ ছাড়ের বিশেষ ছাড় ছিল। জানুয়ারি থেকে এ সুবিধা তুলে নেওয়া হয়। এরপরই বেড়েছে খেলাপি ঋণের পরিমাণ। চলতি বছরের জনুয়ারি-মার্চ তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১০ হাজার ৯৬৪ কোটি টাকা। এতে করে দেশের ব্যাংক খাতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৩১ হাজার ৬২০ হাজার কোটি টাকা। খেলাপির এ অঙ্ক এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ।